পশ্চিমের করোনা মানচিত্রে উঠে এল নতুন এলাকার নাম
Coronavirus

রক্তদাতা নিজেই করোনা আক্রান্ত

ওই শিবিরে কলকাতার এক ব্লাড ব্যাঙ্ক এসেছিল। শিবিরের উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যে ওই ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শালবনি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ০৬:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়েক দিন আগে এক শিবিরে গিয়ে তিনি রক্তদান করেছিলেন। পরে জানা গেল, রক্তদাতা ওই যুবক করোনা আক্রান্ত! ঘটনায় শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে। ওই যুবক বাঁকুড়ার রাইপুরের বাসিন্দা। শালবনির চকতারিনীতে এক পরিচিতের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সেখানকার এক শিবিরেই রক্তদান করেছিলেন তিনি। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ— এ কথা জানার পরেই ওই যুবককে পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, ‘‘ওই যুবক কয়েকদিন আগে এক রক্তদান শিবিরে গিয়ে রক্তদান করেছেন বলে শুনেছি। ওই যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে আসা সকলকেই কোয়রান্টিন করা হচ্ছে।’’ ওই শিবিরে কলকাতার এক ব্লাড ব্যাঙ্ক এসেছিল। শিবিরের উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যে ওই ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, রক্তদানের ১৪ দিনের মধ্যে যদি রক্তদাতার কোভিড-১৯ এর চিহ্ন দেখা যায় বা তাঁর নমুনা পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ হয় বা তিনি যদি কোভিড- ১৯ রোগীর সংস্পর্শে আসেন, তা হলে অব্যাহত রক্ত নষ্ট করে ফেলাই ভাল। হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রক্তের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়, এ ধরনের প্রমাণ এখনও নেই। তবে রক্তদাতা যখন করোনা পজ়িটিভ জানা গিয়েছে, তখন ওই রক্ত সংশ্লিষ্ট ব্লাড ব্যাঙ্ক ব্যবহার নাও করতে পারে। সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট ব্লাড ব্যাঙ্ককেই নিতে হবে।’’ জেলার এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ ব্যবহার না হয়ে থাকলে ওই রক্ত নষ্ট করে দেওয়াই ভাল।’’ শিবিরে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের সকলকেই কি কোয়রান্টিন করা হবে? জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘যাঁরা ওই যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদেরই কোয়রান্টিন করা হবে।’’ প্রাথমিকভাবে জেলার স্বাস্থ্যভবন জানতে পেরেছে, ১১-১২ জন ওই যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন। বেশিরভাগই তাঁর পরিজন। তাঁদের করোনা পরীক্ষাও করা হবে।

Advertisement

বাঁকুড়ার রাইপুরের বাসিন্দা ওই যুবক ২২ মে শালবনির চকতারিনীতে এসেছিলেন। এখানে তাঁর এক পরিচিতের বাড়িতেই ওঠেন। ওই যুবক ২৪ মে চকতারিনীর এক শিবিরে রক্তদান করেছিলেন। শিবিরে ২১ জন রক্তদান করেছিলেন। এর আগে বাঁকুড়ায় তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। সেখানে নমুনা দিয়েই শালবনিতে চলে আসেন তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানতে পারেন, ওই যুবক করোনা আক্রান্ত। বাঁকুড়া থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের স্বাস্থ্যভবনে খবর পাঠানো হয়। আক্রান্তকে পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার সকালেও শালবনিতে এক করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছিল। ওই যুবক দেবগ্রামের মধুপুরের এক এলাকার বাসিন্দা। তিনি মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন। সেখানে তিনি সোনার কাজ করতেন। ২০ মে ফিরেছিলেন। ২৪ মে তাঁকে মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে (লেভেল- ১) ভর্তি করা হয়েছিল। পরে জানা যায়, ওই যুবক করোনা আক্রান্ত।

এতদিন শালবনিতে করোনা আক্রান্ত ছিল না। পরিযায়ী শ্রমিকের সূত্রেই আক্রান্তের হদিস মিলেছে। অনেকেরই আশঙ্কা, এ বার আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন