withdrawal of the incentive scheme

বাণিজ্য ক্ষেত্রে দেওয়া সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার! রাজ্য সরকারের সঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টে লড়াই শিল্পোগোষ্ঠীদের, শুনানি নভেম্বরে

মার্চ মাসে বিল পাশের পর ২ এপ্রিল কলকাতা গেজেটে প্রকাশের মাধ্যমে বিলটি আইনে রূপান্তরিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় আলোচনার সময় জানিয়েছিলেন, প্রকল্পটি চালু হয়েছিল ২০০১-০২ অর্থবর্ষে। তখন রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় থেকে প্রায় দুই দশক ধরে এই প্রকল্প চালু থাকলেও এতদিনে যে বিপুল দায় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উৎসাহ প্রদানকারী প্রকল্প প্রত্যাহারের (ইনসেনটিভ স্কিম) সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৈরি হয়েছে আইনি জটিলতা। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প সংস্থা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে এই সমস্ত মামলার একসঙ্গে শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে হাই কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা চলতি বছরের মার্চ মাসে বিধানসভায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনসেনটিভ স্কিম অ্যান্ড অবলিগেশন ইন দি নেচার অফ গ্র্যান্ট অ্যান্ড ইনসেনটিভ বিল, ২০২৫’ উত্থাপন করেন। পরে ওই বিল পাশের মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিল্পে দেওয়া নানা ধরনের উৎসাহ প্রদানকারী প্রকল্পে সুযোগ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, ওই খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করায় সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিতে আর্থিক জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই ওই বরাদ্দকৃত অর্থ জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে ব্যবহার করাই সরকারের অগ্রাধিকার। বিশেষত, সংবিধানিক ও আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মার্চ মাসে বিল পাশের পর ২ এপ্রিল কলকাতা গেজেটে প্রকাশের মাধ্যমে বিলটি আইনে রূপান্তরিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় আলোচনার সময় জানিয়েছিলেন, প্রকল্পটি চালু হয়েছিল ২০০১-০২ অর্থবর্ষে। তখন রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় থেকে প্রায় দুই দশক ধরে এই প্রকল্প চালু থাকায় এতদিনে যে বিপুল দায় তৈরি হয়েছে তা বর্তমান সরকারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।

Advertisement

অন্যদিকে, শিল্প সংস্থাগুলির বক্তব্য একেবারেই ভিন্ন। তাদের দাবি, এই প্রকল্পের অধীন সুযোগ সুবিধাগুলি দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি হিসাবে ইতিমধ্যেই তাদের প্রাপ্য হয়ে গিয়েছে। বহু প্রতিষ্ঠান সেই হিসাব ধরেই রাজ্যে বিনিয়োগ করেছে। হঠাৎ করে এমন সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার করলে বিনিয়োগকারীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। সেই যুক্তিকে হাতিয়ার করেই বিভিন্ন শিল্প সংস্থা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে। কলকাতা হাই কোর্টের একাংশ আইনজীবী মনে করছেন, মামলাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এক দিকে রাজ্য সরকারের আর্থিক সঙ্কট ও সামাজিক দায়বদ্ধতা, অন্য দিকে শিল্প সংস্থাগুলির দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ ও দাবি। এই দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয় ঘটানো সহজ হবে না।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বর মাসেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলাগুলির শুনানি শুরু হবে। রাজ্য সরকার ও শিল্প সংস্থাগুলির আইনজীবীরা ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন। শিল্পমহলের একাংশ মনে করছে, রায় যদি শিল্পবিরোধী হয়, তবে ভবিষ্যতে বিনিয়োগে বড়সড় ধাক্কা আসতে পারে। অন্য দিকে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির জন্য আর্থিক স্থিতি নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement