গজলডোবা নিয়ে উদ্যোগ

ভোরের আলো ফোটাতে তৎপরতা পর্যটন দফতরের

এই মুহুর্তে অশান্তি চলছে দার্জিলিংয়ে৷ ফলে পাহাড়মুখো হচ্ছেন না পর্যটকরা৷ আবার বর্ষার জন্য বন্ধ ডুয়ার্সও৷ এর ফলে যারা পাহাড়ের বদলে ডুয়ার্স বেড়াতে যাবেন ভেবেছিলেন, পর্যটকদের সেই অংশটাও হতাশ৷ সূত্রের খবর, এই অবস্থায় সমতলে পর্যটনের সুযোগ বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়নের পথে হাটতে চাইছে পর্যটন দফতর৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

পরিদর্শন: তিস্তার পাড়ে পর্যটন হাবের এলাকা ঘুরে দেখলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

পাহাড় যখন অশান্তির আগুনে পুড়ছে, ঠিক তখন গজলডোবায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্পে ‘ভোরের আলো’ ফোটাতে আরো বিশেষ করে তৎপর হল রাজ্যের পর্যটন দফতর৷

Advertisement

ঠিক হয়েছে এ জন্য এ মাসের শেষে ও জুলাইয়ে শিলিগুড়ি কলকাতায় দু’টি ইনভেস্টর মিট হবে৷ যারা এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পর্যটন দফতরের তরফে তাঁদেরও দ্রুত কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে৷

এই মুহুর্তে অশান্তি চলছে দার্জিলিংয়ে৷ ফলে পাহাড়মুখো হচ্ছেন না পর্যটকরা৷ আবার বর্ষার জন্য বন্ধ ডুয়ার্সও৷ এর ফলে যারা পাহাড়ের বদলে ডুয়ার্স বেড়াতে যাবেন ভেবেছিলেন, পর্যটকদের সেই অংশটাও হতাশ৷ সূত্রের খবর, এই অবস্থায় সমতলে পর্যটনের সুযোগ বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়নের পথে হাটতে চাইছে পর্যটন দফতর৷

Advertisement

গজলডোবায় ২০৮ একর জমির উপর তৈরি হবে এই ইকো ট্যুরিজম হাব৷ যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভোরের আলো’৷ পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, তিনটি সংস্থা ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ যার মধ্যে একটি সংস্থা প্রকল্পের কাজ শুরুর ব্যাপারে দু’বছর সময় চেয়েছে৷ তবে বাকি দু’টি সংস্থা দ্রুত কাজ শুরু করবে বলে আশা দফতরের কর্তাদের৷ পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, এ ছাড়াও আরও দশটি সংস্থা এই হাবে প্রকল্প তৈরিতে আগ্রহী৷

তবে এর বাইরেও আরও বিনিয়োগকারীদের সন্ধানে পর্যটন দফতর ইনভেস্টর মিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, এ মাসের ৩০ তারিখ শিলিগুড়িতে একটি ইনভেস্টর মিট হবে৷ জুলাই মাসে কলকাতায় আরেকটি ইনভেস্টর মিট হবে৷ এরপর পুজোর আগেই এই হাবের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য নতুন টেন্ডারের ডাক দেওয়া হবে৷ পর্যটনমন্ত্রী জানান, অনেকেই এই হাবে প্রকল্প তৈরিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন৷

গজলডোবায় ইকো ট্যুরিজম হাব নিয়ে এদিন সেখানে একটি বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী৷ বৈঠকে পর্যটন দফতরের কর্তাদের পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কর্তারা, পুর্ত, সেচ, বন, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্য সরকারের এই দফতরগুলি কী ভাবে তাদের কাজ এগোচ্ছে তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন মন্ত্রী৷

বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের জন্য গজলডোবা থেকে লাটাগুড়ি পর্যন্ত একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি হবে৷ যার জেরে এই দুই এলাকায় দূরত্ব প্রায় ২৯কিলোমিটার কমে যাবে৷ এ ছাড়াও ছয়টি সেতু করবে পূর্ত দফতর৷ এর মধ্যে আমবাড়িতে করতোয়া নদীর ওপর সেতুটি ছাড়া বাকি সেতুগুলির কাজ ২-৩ মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে৷ এ ছাড়াও পূর্ত দফতর একটি সেতু করবে বলে জানান মন্ত্রী৷

মন্ত্রী জানান, বন দফতরের তরফে এখানে আসা পর্যটকদের জন্য জঙ্গল সাফারীর ব্যবস্থা হবে৷ প্রকল্প এলাকায় তৈরি হবে হাতির পিলখানা ও মিউজিয়াম৷ যুব কল্যাণ দফতর একটি যুব আবাস গড়ার কাজ শুরু করেছে৷ এ ছাড়াও সেখানে পাঁচ একর জমির উপর একটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট হবে বলে মন্ত্রী জানান৷ এছাড়া ওভারহেড তারের বদলে মাটির নীচ দিয়ে তার এনে ওদলাবাড়ি ও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে পর্যটন দফতর৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন