আবাসন নির্মাণের জন্য উত্তরপাড়ার হিন্দুস্তান মোটরস কারখানা লাগোয়া জলাভূমি বোজানো হচ্ছে, এই অভিযোগে জনস্বার্থে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে জলাভূমি বুজিয়ে নির্মাণ হচ্ছে কি না, প্রকল্পের নির্মাতাকে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
উত্তরপাড়ায় সি কে বিড়লা গোষ্ঠী পরিচালিত রাজ্যের একমাত্র মোটরগাড়ি তৈরির কারখানা হিন্দমোটরের দরজা দীর্ঘদিন বন্ধ। বাম আমলে এক আবাসন নির্মাণ সংস্থাকে কারখানা লাগোয়া জমি সমেত জলাভূমি হস্তান্তর করা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। শিল্পের জন্য নির্ধারিত ওই জমি আবাসনের জন্য দেওয়া নিয়ে সরব হয় নানা মহল। এমনকী, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর মধ্যে মতপার্থক্যও দেখা গিয়েছিল। এর জেরে তখনকার মতো প্রকল্পটি ঝুলেই থাকে। গত বছরের শেষ দিক ওই জমিতে আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
উত্তরপাড়া এবং হিন্দমোটরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দাবি করে, ওই জমিতে অন্তত ১০০ একর জলাভূমি রয়েছে। সেখানে আবাসন হলে উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর এবং কোন্নগরের বিস্তীর্ণ এলাকার পরিবেশ এবং নিকাশির ভারসাম্য নষ্ট হবে। এ নিয়ে আন্দোলনে নামে তারা। প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে নালিশও জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করে কলকাতা ও চন্দননগরের দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের দাবি, যে ভাবে বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া না মিটিয়ে আবাসন তৈরি হচ্ছে তা আইনবিরুদ্ধ।
ওই দুই সংস্থার তরফে আইনজীবী সুমন্ত বিশ্বাস এবং সুপ্রতীম লাহা জানান, হলফনামা সম্পর্কে পাল্টা বক্তব্য থাকলে তা-ও রাজ্য সরকার ও মামলার আবেদনকারীকে হলফনামা আকারেই পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের গরমের ছুটি শেষ হওয়ার চার সপ্তাহ পরে এই মামলার পরের শুনানি। এ নিয়ে নির্মাণ সংস্থাটির কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে পাননি।
পরিবেশবিদ এবং চন্দননগরের ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’র কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওই নির্মাণকারী সংস্থা পরিবেশের গুরুত্বটি উপেক্ষা করে আবাসন তৈরি করেছে। তারা কোর্টে জানায়, সেখানে মাত্র ৩০ একর জলাভূমি রয়েছে। এই
তথ্য ভুল। ওখানে ১০০ একর জলাভূমি রয়েছে।’’