আয়কর জরিমানা তৃণমূলের

ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই নোটিস পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:২২
Share:

দলীয় তহবিলের উৎস ঠিকমতো দেখাতে না পারার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের কাছে ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা দাবি করল আয়কর দফতর। সূত্রের খবর, ২০১০-’১১ সালের আয়কর রিটার্নের ভিত্তিতেই এই জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। সেই টাকা মেটানো হবে, না আইনি পরামর্শ নেওয়া হবে তা অবশ্য দল এখনও ঠিক করেনি।

Advertisement

ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। তিনি আঙুল তুলেছেন দলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের দিকেও।

তৃণমূলের কাছে ২০১০-’১৪ সাল পর্যন্ত দলীয় তহবিলের হিসাব চেয়েছিল আয়কর দফতর। এর মধ্যে গত লোকসভা ভোটের সময় প্রচার খাতে ২৪ কোটি টাকা খরচের হিসাবও রয়েছে। সেই সময় মমতার যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টারের খরচ এবং প্রতিটি কেন্দ্রে দলীয় পতাকা পাঠানো বাবদ খরচের হিসাব চেয়েছে আয়কর দফতর। দল তার জবাবও দিয়েছে। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট নয় আয়কর দফতর।

Advertisement

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মমতা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে উদগ্রীব। সেই কারণেই তৃণমূল বা আম আদমি পার্টির মতো দলগুলিকে টার্গেট করেছে আয়কর দফতর। পাশাপাশি, ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা জানিয়েছেন, মুকুল রায়ই দলের হয়ে বরাবর এই সব কাজ দেখতেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন হোক বা আয়কর দফতর, কোনও ক্ষেত্রেই তিনি হিসাবপত্র দাখিল করে যাননি। কাগজপত্র কোথায় রয়েছে, সে সবও জানিয়ে যাননি। দল পাঁচ-ছয় বছরের পুরনো কাগজপত্র পেতে নাকাল হচ্ছে।

সূত্রের খবর, চিঠিতে আয়কর দফতর সরাসরি মুকুল রায়ের নাম করে লিখেছে যে, তিনিই লিখিত ভাবে যথাযথ উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। প্রয়োজনে জরিমানা দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু হিসাব পাওয়া যায়নি। ফলে ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা মেটানো হোক। এ বিষয়ে মুকুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বহু দিন আগের ঘটনা। আমার এখন কিছু মনে নেই। আমি সব দেখতামও না।’’

দলীয় সূত্রের দাবি, মমতার আঁকা ছবি বিক্রি থেকে সংগৃহীত টাকা দলীয় তহবিলে রাখা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল দলীয় মুখপাত্র বিক্রির টাকাও। সেই টাকাতেই দল ভোটের খরচ চালিয়েছিল। সেই সংক্রান্ত হিসাব না পাওয়ার বিষয়ে মুকুলকেই দায়ী করতে চায় তৃণমূল। প্রয়োজনে আয়কর দফতরেও তা লিখে জানাতে পারে দল। যদিও মুকুল ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে হেলিকপ্টার আর পতাকা বাবদ ২৪ কোটি টাকা খরচের হিসাব চাওয়া হয়েছে, তা তো মুকুলের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। সেই খরচও তো এখন আয়কর দফতরের আতসকাচের নীচে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন