আরও নামতে পারে পারদ, নয়া রেকর্ডের পথে নভেম্বর

নভেম্বরে হাওয়া অফিসে ‘বিপ্লবের আঁচ’! ভাঙার মুখে গত এক দশকে শীতের যাবতীয় রেকর্ড। ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা এক ধাক্কায় নেমে গিয়েছিল ১৪ ডিগ্রিতে। আচমকা ঠান্ডায় কার্যত জবুথবু হয়ে গিয়েছিলেন মহানগরীর বাসিন্দারা। গত এক দশকের হিসেবে সেটাই ছিল সবচেয়ে কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share:

শীতের সাজ। বুধবার, নিউ মার্কেট চত্বরে। ছবি: রণজিত্‌ নন্দী।

নভেম্বরে হাওয়া অফিসে ‘বিপ্লবের আঁচ’! ভাঙার মুখে গত এক দশকে শীতের যাবতীয় রেকর্ড।

Advertisement

২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতার তাপমাত্রা এক ধাক্কায় নেমে গিয়েছিল ১৪ ডিগ্রিতে। আচমকা ঠান্ডায় কার্যত জবুথবু হয়ে গিয়েছিলেন মহানগরীর বাসিন্দারা। গত এক দশকের হিসেবে সেটাই ছিল সবচেয়ে কম। এ দিকে, বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস! যা কি না এক দশকের সর্বনিম্নের প্রায় সমানই বলা চলে। নভেম্বর শেষ হতে এখনও চার দিন বাকি। পারদ পতনের ধারা দেখে আবহবিদ্‌দের একাংশের অনুমান, এক দশকের রেকর্ড ভেঙে এ বার নতুন রেকর্ড গড়তে পারে নভেম্বর।

মৌসম ভবন সূত্রে খবর, নভেম্বরের গোড়া থেকেই এ বার উত্তর ভারতে তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। আফগানিস্তান-পাকিস্তান থেকে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কাশ্মীরে আছড়ে পড়েছে। সেখানে শুরু হয়ে গিয়েছে তুষারপাতও। দোসর হিসেবে রয়েছে মধ্য ভারতের একটি উচ্চচাপ বলয়। এ সবের জেরেই ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া পূর্ব ভারতে বয়ে আসছে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি শীত জাঁকিয়ে বসেছে বিহার-ঝাড়খণ্ডেও। রাঁচিতে রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৮.৬ ডিগ্রিতে। পটনায় ১১ ডিগ্রি।

Advertisement

নভেম্বরে পূর্ব ভারতে এমন জাঁকিয়ে শীত পড়ার আরও একটি কারণ রয়েছে। সেটা কী?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের ব্যাখ্যা, পূর্ব ভারতের পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের মাত্রা অত্যন্ত কমে গিয়েছে। ফলে আকাশে মেঘ নেই বললেই চলে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় দিনের বেলা সরাসরি রোদ এসে ভূপৃষ্ঠকে গরম করে তুলছে। আর রাতে ভূপৃষ্ঠের তাপ বেশি মাত্রায় বিকিরণ হওয়ায় তাপমাত্রা অনেকটাই নেমে যাচ্ছে। “আগামী কয়েক দিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা এমনই থাকবে। খুব কমবে না। আবার বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।”বলছেন গোকুলবাবু।

হাওয়া অফিসের খবর, কলকাতায় তাপমাত্রা তো কমছেই, পাল্লা দিয়ে তা কমছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও। এ দিন দক্ষিণবঙ্গের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল বীরভূমের শ্রীনিকেতনে, ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বীরভূমের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বহরমপুর। আবহাওয়া দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বহরমপুরে রাতের তাপমাত্রা (১২.২ ডিগ্রি) স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে। নভেম্বরেই এমন পরিস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।”

শীতকালে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি নীচে নামলেই শৈত্যপ্রবাহের কথা ঘোষণা করে। তা হলে বহরমপুরে কি শৈত্যপ্রবাহ চলছে?

আবহবিদেরা অবশ্য এমনটা বলছেন না। তাঁদের ব্যাখ্যা, শৈত্যপ্রবাহ ঘোষণা করতে হলে রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি বা তার নীচে নামতে হবে। এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। খুব শীঘ্রই শৈত্যপ্রবাহ হবে, এমনটাও বলছেন না তাঁরা। আবহবিজ্ঞানীদের একাংশের ব্যাখ্যা, শীত সাধারণত দফায় দফায় চলে। এটা প্রথম দফা শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিন ঠান্ডা চলার পরে ফের বাড়বে তাপমাত্রা। মৌসম ভবনের এক বিজ্ঞানী বলছেন, ‘‘পূর্ব উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে যদি একটি ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ তৈরি হয়, তা হলেই শীতের ভেল্কি কমে যাবে।” ওই ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের হাত ধরেই জলীয় বাষ্প বা মেঘ ঢুকবে বাংলার পরিমণ্ডলে। দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। বাড়বে রাতের তাপমাত্রা। তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কি?

আপাতত কোনও সম্ভাবনা দেখছে না আলিপুর হাওয়া অফিস।

কমিশনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ তালুকদারের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা

প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দীনেশ বাজপাই ২১ জুলাই কমিশনের পাঠানো হাজিরার সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ বার আর শুধু সমন নয়, ওই কমিশনের বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করলেন কলকাতা পুলিশের পূর্বতন কমিশনার, আর এক প্রাক্তন আইপিএস অফিসার তুষার তালুকদার। বুধবার তিনি মামলা করেছেন বলে কমিশনের খবর। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানকে কেন্দ্র করে গোলমাল হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে পুলিশ গুলি চালালে ১৩ জন মারা যান। আহত হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও। ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেই ঘটনাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়কে বিচার বিভাগীয় কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়। কমিশন সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশকর্তারা জানান, গুলি চালানো হয়েছিল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই। কমিশনে পুলিশকর্তারা যে-সাক্ষ্য দেন, তা তুষারবাবুর বিরুদ্ধে গিয়েছে। তাই তাঁকে ২৮ নভেম্বর কমিশনে হাজির হতে বলে সমন পাঠায় কমিশন। তার বিরুদ্ধে আবেদনে তিনি বলেছেন, এই কমিশন গঠন সম্পূর্ণ ভাবে অসাংবিধানিক ও বেআইনি। নিছক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই কমিশন তৈরি করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, সেই সময় যাঁরা পুলিশের ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষ ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন