নিখোঁজ বিমানযাত্রী কাটা পড়লেন ট্রেনে

বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর কর্মীদের হাত ফস্কে পালিয়ে যান ওই যাত্রী। রেল পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে বারাসত স্টেশনের কাছে রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটার সময়ে রেজ্জাক ট্রেনে কাটা পড়েন। তাঁর প্যান্টের পকেটে একটি মোবাইল নম্বর পেয়ে পুলিশ সেখানে ফোন করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

আব্দুর রেজ্জাক। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন মঙ্গলবার। বারাসতে সেই বিমানযাত্রীর দেহ পাওয়া গেল বুধবার রাতে। রেললাইনের ধারে।

Advertisement

আব্দুর রেজ্জাক (৩৯) নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি ত্রিপুরার সোনামুড়ায়। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে কলকাতা ছুঁয়ে আগরতলা যাচ্ছিলেন তিনি। দিল্লি থেকে কলকাতায় আসার পরে ইন্ডিগোর বিমানে অস্বাভাবিক আচরণের অভিযোগে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় রেজ্জাককে।

বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর কর্মীদের হাত ফস্কে পালিয়ে যান ওই যাত্রী। রেল পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে বারাসত স্টেশনের কাছে রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটার সময়ে রেজ্জাক ট্রেনে কাটা পড়েন। তাঁর প্যান্টের পকেটে একটি মোবাইল নম্বর পেয়ে পুলিশ সেখানে ফোন করে। নম্বরটি সোনামুড়ায় রেজ্জাকের এক প্রতিবেশীর। সেখান থেকে খবর আসে কলকাতায়। রেজ্জাককে খুঁজতে বুধবার সকালেই আগরতলা থেকে কলকাতায় পৌঁছে যান রেজ্জাকের দুই আত্মীয় ইউনুস মিয়াঁ ও খলিল মিয়াঁ। খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতে বারাসত স্টেশনে গিয়ে সেই দেহ শনাক্ত করেন তাঁরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ময়না-তদন্ত হয়েছে। শুক্রবারের বিমানে রেজ্জাকের দেহ নিয়ে আগরতলা উড়ে যাবেন ইউনুসরা। এই ঘটনায় অভিযোগের তির মূলত ইন্ডিগোর দিকেই। প্রশ্ন উঠছে, রেজ্জাককে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বা বিমানবন্দর থানার হাতে না-দিয়ে ইন্ডিগো নিজেদের কাছেই রেখে দিয়েছিল কেন?

ইন্ডিগোর বক্তব্য, দিল্লি থেকে বিমানটি কলকাতায় নামার পরে অদ্ভুত ব্যবহারের অভিযোগে রেজ্জাককে যখন নামিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন শ্যালক অনল হক। অভিযোগ, অনলকে নামতে বলা সত্ত্বেও তিনি রেজ্জাকের সঙ্গে নামেননি। এমনকী তিনি রেজ্জাককে চেনেন না বলেও জানিয়ে দেন। ইন্ডিগোর দাবি, গাফিলতি যদি কারও তরফে হয়ে থাকে, তবে সেটা হয়েছে অনলের তরফেই। ওই উড়ানে অনলদের পাশের আসনের যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদেরও বয়ান নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইন্ডিগো।

মানসিক ভাবে অসুস্থ রেজ্জাককে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিমানবন্দরের মেডিক্যাল ইউনিটে। রেজ্জাকের স্ত্রী রোশনারা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হয় ইন্ডিগোর কর্মীদের। স্ত্রী কান্নাকাটি করছিলেন। সকাল থেকে রেজ্জাকের পেট খালি থাকায় ওষুধ দেওয়ার আগে তাঁকে কিছু খাইয়ে আনতে বলেন চিকিৎসক শর্মিলা কবিরাজ। ইন্ডিগোর এক জন কর্মী ছিলেন রেজ্জাকের সঙ্গে। অন্য কর্মী খাবার আনতে চলে যান। সেই সময়েই রেজ্জাক পালিয়ে যান।

অনলের দাবি, ‘‘বিমান থেকে রেজ্জাককে নামানোর সময়ে আমি বাধা দিয়েছিলাম। বিমানসেবিকাদের জানিয়েছিলাম, ওঁর মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমি ওঁকে নির্বিঘ্নে আগরতলা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারব। আমার কথা না-শুনে রেজ্জাককে নামিয়ে দেওয়া হয়। আমাকে ওঁরা জানান, রেজ্জাককে পরের বিমানে আগরতলায় পাঠানো হবে। তখনই রেজ্জাকের স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলি। উনি আমাকে আগরতলায় ফিরে যেতে বলেন।’’

রোশনারার দাবি, অনলের সঙ্গে তাঁর কোনও কথাই হয়নি। ওই মহিলার আশঙ্কা, অনলের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তাঁদের উপরে হামলা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন