Panchayet Department

১০০ দিনের কাজের বাকি টাকা দাবি পঞ্চায়েত দফতরের, জব কার্ডের তথ্য যাচ্ছে কেন্দ্রে

জব কার্ড নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা অর্থের দাবি জানাতে চলেছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২২ ১২:৫৮
Share:

১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ কেন্দ্রের।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ঘিরে কেন্দ্র-রাজ্য সঙ্ঘাত ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। রাজ্যে জব কার্ড নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক, এমনটাই অভিযোগ পঞ্চায়েত দফতরের। তাই এ বার জব কার্ড নিয়ে যাবতীয় তথ্য দিল্লিতে পাঠিয়ে ফের প্রাপ্য অর্থের দাবি জানাবে পঞ্চায়েত দফতর। সঙ্গে রাজ্যের বিরুদ্ধে করা কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতির অভিযোগও খণ্ডাতে চলেছে তারা।

Advertisement

যাবতীয় তথ্য একত্র করে শীঘ্রই গ্রামোন্নয়ন দফতরকে চিঠি দিতে চলেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। সেই চিঠিতে জব কার্ডের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়নি বলেই দাবি করা হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজে ভুয়ো লোক কাজ পেয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের কর্মীদের কাজ দেওয়া হয়েছে অন্যায্য ভাবে। প্রকৃত দাবিদারদের কাজ দেওয়া হয়নি। ভুয়ো জব কার্ড দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা দেওয়া হচ্ছে। তদন্ত করে কেন্দ্র প্রকৃত সত্য জানার পরেই টাকা পাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, গত ন’মাসের পাওনা বাকি রাজ্যের। সব মিলিয়ে সাত হাজার ২৯ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার তা অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে বলে তাদের অভিযোগ। টাকা না মেলায় তৃণমূল রাস্তায় নামার কর্মসূচি নিয়েছে। আগামী ৫ ও ৬ জুন রাজ্য জুড়ে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে তৃণমূল। তার সঙ্গেই ফের কেন্দ্রকে চিঠি লেখার বিষয়ে মনস্থির করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি বলেন,‘‘রাজ্যে মোট জব কার্ডের সংখ্যা এক কোটি ৪৩ লক্ষ। এর মধ্যে কার্যকরী জব কার্ডের সংখ্যা এক কোটি চার লক্ষ। কোনওটিই ভুয়ো নয়। নানা কারণে তাঁরা ৩৯ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার কাজে আসেন না। তাই স্রেফ টাকা আটকে রাখাতেই এ সব বলা হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের দু’মাস কেটে গেলেও শ্রম দিবসের হিসেব জানাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এ বার ৩২.১৪ কোটি শ্রম দিবসের জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনও টুঁ শব্দ করেনি তারা। তাই আমরা নয়, নিয়ম ভাঙছে মোদী সরকারই। সঙ্গে আমরা আমাদের দাবি ও তথ্য জানিয়ে ফের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছি। যাতে অতি দ্রুত আমাদের রাজ্যের একশো দিনের টাকা পাঠানো হয়।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘কাজ করার ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকের আকাউন্টে টাকা পাঠানোই আইন। কিন্তু মাসের পর মাস আইন ভেঙে কেন্দ্র তা দিচ্ছে না। তাই জব কার্ড নিয়ে তথ্য দিয়েই তাদের চিঠি দেওয়া হবে।’’ সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজে অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি বাবদ বাকি তিন হাজার ২৮৬ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বরের পর আর টাকা পায়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। একই ভাবে ১০০ দিনের কাজে ব্যবহার করা উপাদান বাবদ বকেয়া অর্থের পরিমাণও তিন হাজার ৭৪২ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। কেন্দ্র যা ২০২১ সালের ১৪ অগস্টের পর থেকে অন্যায় ভাবে আটকে রেখেছে বলেই দাবি করেছেন মন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতেও কেন্দ্রীয় সরকারের টনক নড়েনি বলেই অভিযোগ করেছে পঞ্চায়েত দফতর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন