Shramshree Portal

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমশ্রী প্রকল্পের পোর্টাল চালু হচ্ছে সোমবার থেকেই, জানিয়ে দিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক

বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা, ভয় দেখানো এবং পুলিশি হয়রানির ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অসম, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে বহু শ্রমিককে বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩৯
Share:

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ‘শ্রমশ্রী পোর্টাল’। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি জানান, বিজেপিশাসিত রাজ্য থেকে অত্যাচারিত হয়ে ফিরে আসা বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকেরা জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শ্রম দফতর উদ্যোগী হয়েছে। শ্রমমন্ত্রী বলেন, “২১ অগস্ট থেকে অফলাইনে পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ২০ হাজারের বেশি আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে। এখন থেকে এই সমস্ত আবেদন ধাপে ধাপে পোর্টালে আপলোড করা হবে। যাঁরা অফলাইনে আবেদন করেছেন তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না।” শ্রমিকেরা পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন জমা দিতে পারবেন এবং সেই আবেদনের অগ্রগতি সহজেই জানতে পারবেন।

Advertisement

শ্রমমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলা, ভয় দেখানো এবং পুলিশি হয়রানির ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অসম, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে বহু শ্রমিককে বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হচ্ছে। আরও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে— বাংলার শ্রমিকদের জোর করে পুশব্যাক করা হচ্ছে কিংবা ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের দাবি, এ সব ঘটনার জেরে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মস্থল থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের আর্থিক অনিশ্চয়তা ও কর্মসংস্থান সঙ্কট কাটাতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য।

এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেছেন ‘শ্রমশ্রী প্রকল্প’। এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করলে, যাঁরা কাজ পাচ্ছেন না, সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিককে আগামী এক বছর প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার। শ্রমমন্ত্রী বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হল— অত্যাচারিত শ্রমিকেরা যাতে রাজ্যে ফিরে এসে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে ও কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। শ্রমশ্রী প্রকল্প সেই লক্ষ্যেই চালু হয়েছে।’’ শ্রমশ্রী পোর্টাল চালুর ফলে শ্রমিকদের তথ্যের একটি একক ভান্ডার তৈরি হবে। এর মাধ্যমে তাঁদের সঠিক পরিচয়পত্র প্রদান, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, বিমা, শিক্ষা এবং কল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হবে। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি জেলার ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে, যাতে শ্রমিকরা নথিপত্র-সহ দ্রুত এই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিজেপিশাসিত রাজ্যে শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের ঘটনাকে সামনে রেখেই তৃণমূল শ্রমশ্রী প্রকল্পের সূচনা করেছে। এর মধ্যে দিয়ে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বার্তা দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সব মিলিয়ে, শ্রমশ্রী পোর্টাল চালুর মধ্যে দিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকারের একটি বড় পদক্ষেপ কার্যকর হল। আগামী দিনে লক্ষাধিক শ্রমিক এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন বলে আশা করছে শ্রম দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement