Finance

welfare projects: স্বাস্থ্য আর বিভিন্ন কল্যাণ প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি বাড়তি খরচ করে ফেলেছে রাজ্য!

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় অনুমোদনের জন্য এই হিসাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এই অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়ে বিরোধীদের তেমন আপত্তি না-থাকলেও টাকার ‘বাস্তবসম্মত’ খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। যদিও পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে খরচের যৌক্তিকতা দাবি করেছে সরকার। এ দিন এই অতিরিক্ত খরচের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে বিধানসভায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ০৬:১৭
Share:

অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ছবি পিটিআই।

চলতি ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বিভিন্ন খাতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করেছে রাজ্য সরকার। মূলত স্বাস্থ্য ও কল্যাণ প্রকল্পের খাতেই বাড়তি ব্যয় হয়েছে বলে জানাচ্ছে সরকারি তথ্য। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, কোভিডের বিভিন্ন তরঙ্গের ধাক্কা, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য অতিরিক্ত এই খরচ করতে হয়েছে। এর জন্য বাজার থেকে যে-ধার করতে হয়েছে, তার সুদ বাবদ অতিরিক্ত প্রায় ৪৫৬৬ কোটি টাকা গুনতে হবে সরকারকে। অন্যান্য আরও কিছু ধার বাবদ অতিরিক্ত সুদের পরিমাণ প্রায় ১৪৯ কোটি। সব মিলিয়ে ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বাজেট-বহির্ভূত ২০,৭৫১.৫৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে রাজ্য।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় অনুমোদনের জন্য এই হিসাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এই অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়ে বিরোধীদের তেমন আপত্তি না-থাকলেও টাকার ‘বাস্তবসম্মত’ খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। যদিও পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে খরচের যৌক্তিকতা দাবি করেছে সরকার। এ দিন এই অতিরিক্ত খরচের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে বিধানসভায়।

অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় বলেন, “অতিরিক্ত ব্যয় অনুমোদন না-করালে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়। আচমকা পরিস্থিতিগত কারণে এই খরচ করতে হয়েছে। এই অতিরিক্ত খরচ উপযোগী এবং যথাযথ হয়েছে।”

Advertisement

তবে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বিধানসভায় অভিযোগ করেন, প্রচুর টাকা ধার করতে হয়েছে সরকারকে। এত খরচের প্রকল্পের টাকা কোথা থেকে আসছে এবং তা বাস্তবে কতটা কাজে লাগছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

তার জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, কোভিড পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যে পরিকাঠামো অনেক বাড়াতে হয়েছে। খাদ্যসাথী, দুয়ারে রেশন, আবাস যোজনা, বিদ্যুৎ শুল্কে ভর্তুকি, বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা, পড়ুয়াদের বৃত্তি ইত্যাদি খাতে পরিস্থিতিগত কারণেও বরাদ্দের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে সরকারকে। বিজেপির উদ্দেশে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে চন্দ্রিমা প্রশ্ন তোলেন, ২০১৪ থেকে টানা ক্ষমতায় থাকার পরেও নরেন্দ্র মোদীর সরকার যথাযথ শিক্ষা পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি বলেই কি ‘ছাত্রছাত্রীদের গুলির মুখে থাকতে হয়েছে’! প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, ‘গুলির মুখে থাকতে হয়েছে’ বলতে ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদেরই হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বিধানসভায় চন্দ্রিমার সংযোজন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার সময় রাজ্যে মেডিক্যাল অর্থাৎ চিকিৎসা শিক্ষার আসন ছিল ১৩৫৫টি। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি। বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে রাজ্যে। পরিকাঠামো বেড়েছে। ফলে ব্যয় করতে হয়েছে সরকারকে। তার পরেই অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য, “পিএম কেয়ার ঠিকমতো খরচ হচ্ছে তো!”

বিধানসভায় চন্দ্রিমার জবাব চলাকালীনই বিজেপি বিধায়কেরা কক্ষ ত্যাগ করেন। সভাকক্ষে বিরোধীদের কেউ না-থাকায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধীদের এ ভাবে চলে যাওয়া অসহনশীল আচরণ। আশা করব, তাঁরা এমন আচরণ থেকে বিরত থাকবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন