‘হোম’-এর আবেদনে বিড়ম্বনায় রাজ্যের ‘হোম সেক্রেটারি’

তিনি রাজ্যের ‘হোম সেক্রেটারি’। তা হলে নিশ্চয়ই রাজ্যে ‘হোম’ (বাড়ি) তৈরির হর্তা-কর্তা! মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে তাই তাঁর কাছেই ভূরি ভূরি আবেদন জমা পড়ছে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৫১
Share:

অত্রি ভট্টাচার্য

কী বিড়ম্বনায় পড়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য!

Advertisement

তিনি রাজ্যের ‘হোম সেক্রেটারি’। তা হলে নিশ্চয়ই রাজ্যে ‘হোম’ (বাড়ি) তৈরির হর্তা-কর্তা! মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে তাই তাঁর কাছেই ভূরি ভূরি আবেদন জমা পড়ছে।

একটা-দু’টো নয়— গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ি চেয়ে চার-পাঁচটি করে আবেদনপত্র পাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, সব চিঠিরই বয়ান মোটামুটি এক— ‘আমার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। আপনি হোম সেক্রেটারি হিসেবে ইন্দিরা আবাস যোজনা বা অন্য কোনও যোজনায় যদি আমাদের জন্য একটি ‘হোম’-এর ব্যবস্থা করে দেন।’

Advertisement

স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, চিঠিগুলি আসছে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি কিংবা জুনপুট এলাকা থেকে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মৌখিক ভাবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবু চিঠি আসার বিরাম নেই। বাধ্য হয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব এ বার জেলাশাসককে চিঠি পাঠাবেন।’’

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রশ্নে কোর্টে রাজ্য

বিস্মিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। সেখানকার এক কর্তা জানান, ইন্দিরা আবাস যোজনা উঠে গিয়েছে। তার বদলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা চালু হয়েছে। এ রাজ্যে যা ‘বাংলা আবাস যোজনা’ নামে পরিচিত। ওই কর্তার দাবি, ‘‘ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরে ১৮ হাজার নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এর বাইরেও কেউ চাইলে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাতে পারেন। জেলাশাসকের নিজস্ব কোটা রয়েছে। তাতেও বাড়ি তৈরির টাকা মেলে। কিন্তু ওঁরা স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে কেন আবেদন জানিয়েছেন, বুঝতে পারছি না।’’

নবান্নের এক কর্তার ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকারের ‘রুল অব বিজনেস’ অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্র দফতরকে ‘হোম ডিপার্টমেন্ট’ বলা হয় ‘হোমল্যান্ড’ বোঝাতে। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রকে পৃথক করে দেখাতেই এই ব্যবস্থা। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গ্রামীণ আবাস যোজনার জন্য গ্রামোন্নয়ন দফতর কিংবা আবাসন দফতরকে চিঠি লেখা যায়। ‘হোম’ শব্দটি ছাড়া স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে বাড়িঘরের কোনও সম্পর্কই নেই।’’

এই ‘হোম’ যে সেই ‘হোম’ নয়, আচমকাই কি লোকে তা ভুলে গেল?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথা, ‘‘এর নেপথ্যে একটি চক্র কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে আসছেন। তাঁদের বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার আশা দিয়ে ওই ব্যক্তিই সব চিঠি পাঠাচ্ছেন বলে আমাদের সন্দেহ।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রোশনী কোমল বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে বিষয়টি জেনেছি। ওই এলাকার সব বিডিও-কে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে। তাঁদের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন