নন্দীগ্রামের ছায়া যেন ভগবানপুরে! পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে ছায়া সতর্ক-বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে শাসক শিবিরে!
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে মহম্মদপুর-১ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান নান্টু প্রধান খুনের ঘটনায় মুখে বিজেপি-সিপিএমের উপরেই দোষ চাপিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু এলাকার সরেজমিন পর্যবেক্ষণ বলছে, নন্দীগ্রামের মতো ভগবানপুরেও জমি বাঁচাতে প্রতিরোধ কমিটি গড়েছিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, নান্টু-সহ শাসক দলের নেতাদের একাংশের মদতে চাষের জমিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো চিংড়ি চাষের নোনা জল। ‘ভগবানপুর-১ ব্লক সংগ্রাম কমিটি’ গড়ে এগরার মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসকের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। নান্টু-হত্যার পরে গ্রামে গিয়েও দেখা গিয়েছে সেই নন্দীগ্রামের কায়দায় সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা পোস্টার— ‘ভেনামি (চিংড়ি) চাই না, ভাত চাই’!
নন্দীগ্রামে আন্দোলন-পর্বে সামনে থাকতেন মহিলারা। গ্রামে পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ ঢুকলে শাঁখ, উলুধ্বনির মাধ্যমে তাঁরা সতর্ক করে দিতেন পুরুষদের। ভগবানপুরেও নান্টু ঢোকার পরে শনিবার মহিলারা শাঁখ বাজিয়েছিলেন। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীর সুরেই কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এলাকায় এলাকায় বড়লাট, ছোটলাট, মাতব্বর তৈরি হয়েছে। তৃণমূল এখন থেকে সতর্ক না হলে আরও জনরোষের বিস্ফোরণ ঘটবে!’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘মানুষের ভয় ভাঙছে।’’
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বও সম্ভবত বার্তা পড়তে পারছেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী মেদিনীপুরে এবং মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারুইপুরে পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনে আচার-ব্যবহার নিয়ে রবিবার সতর্ক করেছেন কর্মীদের। বক্সী বলেছেন, ‘‘শুধু নিজের কলেবর বৃদ্ধির জন্য দলকে ব্যবহার করা যাবে না। হোঁচট খেয়ে পড়লে সামলানোর কেউ থাকবে না!’’ পার্থবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘দলের পতাকাটা নিজেদের শ্রীবৃদ্ধির জন্য নয়!’’