NEET

পরীক্ষা দিতে ১৪০ কিমি 

ভোর সাড়ে ৩টেয় ঘুম থেকে উঠেছিলাম। স্নান সেরে সামান্য মুড়ি খেয়েই বেরিয়ে পড়তে হয়।

Advertisement

শিবপ্রসাদ খাঁড়া (নিট পরীক্ষার্থী)

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৩৪
Share:

অটোয় চেপে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে শিবপ্রসাদ খাঁড়া। নিজস্ব চিত্র

নিট পরীক্ষায় বসার ইচ্ছে অনেক দিনের। সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা দিতে যেতে এতটা সমস্যায় পড়তে হবে ভাবতে পারিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের বিষ্ণপুর গ্রামে আমার বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র বজবজের অমৃত বিদ্যালয় প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। ট্রেন চললে হয়ত এই পথ যেতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হত না। কিন্তু তা না থাকায় বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে হল।

Advertisement

ভোর সাড়ে ৩টেয় ঘুম থেকে উঠেছিলাম। স্নান সেরে সামান্য মুড়ি খেয়েই বেরিয়ে পড়তে হয়। সাগরের চৌরঙ্গি মোড় থেকে ছোট গাড়িতে করে কচুবেড়িয়া ঘাটে আসি। সাড়ে ৫টা নাগাদ দিনের প্রথম ভেসেল ধরে মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে আসি লট-৮ ঘাটে। সেখান থেকে টোটোতে চেপে কাকদ্বীপের নতুন রাস্তার মোড়ে পৌঁছই। বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষার পরে পৌনে সাতটা নাগাদ একটা

বাস আসে। সেই বাসে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টায় পৌঁছই তারাতলায়। তারাতলা মোড় থেকে অটো ধরে যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছলাম, তত ক্ষণে এগারোটা বেজে গিয়েছে। পেটে আগুন জ্বলছে। খাবার হোটেল খুঁজছিলাম। কিন্ত কাছাকাছি হোটেল পেলাম না। সময় হয়ে যাচ্ছে দেখে সাড়ে ১১টা নাগাদ পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে যাই।

Advertisement

আমার সঙ্গে পরিবারের কেউ ছিল না। ঢুকতেই বাড়তি জিনিসপত্র একটা জায়গায় রেখে দিতে বলে পুলিশ। দূরত্ব বজায় রেখে প্রত্যেককে হ্যান্ড-সানিটাই‌জ়ার দেওয়া হয়। শরীরেও জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। খালি পেটেই কোনও রকমে পরীক্ষা দিই। ৫টার পরে পরীক্ষা শেষ করে বেরিয়ে দেখি, কোনও অটো নেই। কিছু ক্ষণ পরে তারাতলাগামী একটা বাস পেয়ে যাই। বাসে ঠাসাঠাসি ভিড়। কিন্তু উপায় নেই। শেষ ভেসেল পেতে গেলে দেরি করলে চলবে না। ওই বাসেই চাপাচাপি করে উঠে পড়ি। কোনও ভাবে তারাতলায় নেমে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই বুঝতে পারলাম, বাড়ি ফেরার শেষ ভেসেল আর কোনও মতেই ধরা যাবে না। শেষ পর্যন্ত আমার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে আসা একজনে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটানোর কথা হয়। ৭টার পরে বেহালায় সেই বাড়িতে পৌঁছে ভাত মুখে দিলাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন