স্যালাইন-সুচের এক ফোঁটা রক্তে ওঁদের দোল

ওঁরা মানে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকপদে নিয়োগের দাবিতে অনশন চালিয়ে যাওয়া প্রার্থীরা। তা হলে কি সর্বজনের রং খেলার দিনে একটুও রং লাগেনি তাঁদের দেহে-মনে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৯ ০১:৪১
Share:

আন্দোলন: অনশনে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার। সুমন বল্লভ

সারা কলকাতা, সারা বাংলা দোল উৎসবে মাতোয়ারা। বৃহস্পতিবার কিন্তু রংহীন, চূড়ান্ত বিবর্ণ দিন কাটল ওঁদের। এমনকি ওঁরা বলে দিলেন, ওঁদের দোল বৃহস্পতিবার নয়। দাবি পূরণ হলে তবেই রং খেলবেন ওঁরা।

Advertisement

ওঁরা মানে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকপদে নিয়োগের দাবিতে অনশন চালিয়ে যাওয়া প্রার্থীরা। তা হলে কি সর্বজনের রং খেলার দিনে একটুও রং লাগেনি তাঁদের দেহে-মনে? অনশনকারীরা জানাচ্ছেন, লেগেছে তো! লেগেছে একেবারে রক্ত-রং। টানা অনশন করতে গিয়ে যাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, হাসপাতালে তাঁদের হাতে স্যালাইনের সুচ ফোটানোর সময় একটু রক্ত বেরোচ্ছে তো! তাই তাঁদের দোলের রং এ বার শুধুই লাল।

দোলে ওঁদের অনশন ২২ দিনে পড়ল। অন্যান্য দিন মেয়ো রোডে অনেক পথচারী অনশন-মঞ্চের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে থেমে যান। অনশনকারীদের বক্তব্য শুনে সহানুভূতি প্রকাশ করেন। দোলের দিন মেয়ো রোডে পথচারী খুব কম। ওই এলাকা অনেকটাই সুনসান। প্রকাশ ঘোষ নামে এক অনশনকারী জানান, তাঁর মা-বাবা তাঁকে দোলের দিন বাড়ি থেকে ঘুরে যেতে বলেছিলেন। ‘‘আমি যাইনি। জেলায় জেলায় শিক্ষকের প্রচুর পদ খালি থাকা সত্ত্বেও শূন্য পদ ‘আপডেট’ না-হওয়ায় আমরা চাকরি পাচ্ছি না। কাউন্সেলিং হয়ে নিয়োগপত্র হাতে আসার আগে পর্যন্ত আমরা দাবিতে অনড় থাকবো। দাবি পূরণ হলে তবেই বাড়ি যাব। তখনই আমরা মাতব রঙের উৎসবে। তার আগে নয়,’’ বললেন প্রকাশ।

Advertisement

আরও পডু়ন: প্রথম তালিকায় ২৮ প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই ক্ষোভ-বিতর্ক শুরু রাজ্য বিজেপির অন্দরে

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দোলের আগের দিন অর্থাৎ বুধবার এক অনশনকারিণীর মা নদিয়া থেকে এসেছেন মেয়ের কাছে। তানিয়া শেঠ নামে ওই অনশনকারিণী বলেন, ‘‘দোলে প্রতি বছর আবির খেলি। এ বার টানা অনশন করছি। শরীর অসুস্থ। মা থাকতে না-পেরে চলে এসেছেন আমাকে দেখতে। মা আমার সঙ্গেই আছেন অনশন-মঞ্চে।’’ কেউ কেউ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে দোলের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন বন্ধুদের। ‘‘সারা দিনে প্রচুর বন্ধু আমাকে ফেসবুকে দোলের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছে। বলেছে, আমাদের এই আন্দোলন সফল হবেই। উত্তরে আমরাও দোলের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। এ বার আমাদের কাছে দোল উৎসব বলতে শুধু এইটুকুই,’’ বললেন অন্য এক অনশনকারী।

আন্দোলনকারীরা জানান, দোলের আগের দিন টানা অনশনে তিন জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দোলের দিন রাস্তায় গাড়ি-ট্যাক্সি কম। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হবে। তাই এ দিন সকলেই খুব সাবধানে আছেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কেউ সামান্য অসুস্থ হলেই তাঁর চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন