আন্তর্জাতিক প্রথা মেনেই বাছাই পর্ব হীরক জয়ন্তীতে

আনন্দ-সম্মানের প্রতীক্ষায় তিন

আজ থেকেই নতুন আনন্দ পুরস্কারের কাউন্টডাউন!বিবেচনায় তিনটি বই। আনিসুজ্জামানের ‘বিপুলা পৃথিবী’, অনিতা অগ্নিহোত্রীর ‘মহানদী’ ও পথিক গুহের ‘ঈশ্বরকণা মানুষ ইত্যাদি’। ১৪২৩ বঙ্গাব্দের আনন্দ-সম্মানের জন্য এই তিনটি বইকে চূড়ান্ত বাছাই-তালিকায় রেখেছেন বিচারকমণ্ডলী।

Advertisement

গৌতম চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

আনিসুজ্জামান, অনিতা অগ্নিহোত্রী এবং পথিক গুহ

আজ থেকেই নতুন আনন্দ পুরস্কারের কাউন্টডাউন!

Advertisement

বিবেচনায় তিনটি বই। আনিসুজ্জামানের ‘বিপুলা পৃথিবী’, অনিতা অগ্নিহোত্রীর ‘মহানদী’ ও পথিক গুহের ‘ঈশ্বরকণা মানুষ ইত্যাদি’। ১৪২৩ বঙ্গাব্দের আনন্দ-সম্মানের জন্য এই তিনটি বইকে চূড়ান্ত বাছাই-তালিকায় রেখেছেন বিচারকমণ্ডলী। তিনটির মধ্য থেকে তাঁরা একটিকে নির্বাচন করবেন এ বারের পুরস্কারের জন্য।

এই প্রহর গণনা থেকেই বাঙালির পরিচিত সাহিত্য পুরস্কার নতুন হয়ে উঠছে তার হীরক জয়ন্তীতে। ১৯৫৮ সালে আনন্দ পুরস্কারের শুরু, সে বার সম্মানিত হয়েছিলেন এই বঙ্গের দুই লেখক: বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ও সমরেশ বসু। তার পর ছয় দশক ধরে কলকাতার গণ্ডিতে সীমিত না থেকে ক্রমেই আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে পুরস্কার।

Advertisement

আর সেই আন্তর্জাতিকতার রেশ টেনেই এ বার বাঁক বদল। ইউরোপ, আমেরিকার বহুখ্যাত নানা সাহিত্য পুরস্কারে দুটি করে তালিকা নির্ধারিত হয়। প্রথমে লং লিস্ট, পরে কাটছাঁট করে শর্ট লিস্ট। সেখান থেকেই বিচারকরা বিজয়ীকে বেছে নেন। চূড়ান্ত ঘোষণার আগে অবধি জেগে থাকে কৌতূহল, চলতে থাকে জল্পনা, আলোচনা, তর্ক।

আনন্দ পুরস্কারের বাছাইকাহিনিও এ বার অংশত সেই রকম। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশিত বইগুলির মধ্য থেকে প্রথম পর্বের বাছাই। সেই প্রাথমিক তালিকার বইগুলি পাঠানো হয় পাঁচ জন বিচারকের কাছে। তাঁদের প্রথম পছন্দ অনুযায়ী মনোনীত হয়েছে এই তিনটি বই। এর পর শেষ পর্বে তাঁরা নির্বাচন করবেন, কোন বইটি এ বারের আনন্দ পুরস্কার পাবে।

আশি বছর বয়সী আনিসুজ্জামানই এ বারের বাছাই-গ্রন্থের লেখকদের মধ্যে প্রবীণতম। তাঁর আত্মজীবনীর নতুন খণ্ড ‘বিপুলা পৃথিবী’, প্রকাশ করেছে ঢাকার ‘প্রথমা’। নব্বইয়ের দশকে তাঁকে উপদেষ্টা করে বাংলাদেশ থেকে বেরিয়েছিল হাজার বছরের বাংলা কবিতা, গান ও নাটক নিয়ে ১৪টি ক্যাসেটের সঙ্কলন ‘ঐতিহ্যের অঙ্গীকার’। ১৯৯৪ সালে সেই কৃতির জন্য আনন্দ-সম্মান পান তিনি।

আরও পড়ুন:শিল্পপথের নিরন্তর পথিক, সব নিয়েই অনন্য সৌমিত্র

পথিক গুহ জনপ্রিয় বিজ্ঞান-লেখক। তাঁর ‘ঈশ্বরকণা মানুষ ইত্যাদি’ (আনন্দ) বইয়ে ডারউইন, বিজ্ঞানীর গুরুবাদ অনেক মণিমুক্তোই ছড়িয়ে আছে। বিজ্ঞানচর্চার জন্য প্রথম আনন্দ পুরস্কার আজ থেকে ৫০ বছর আগে। ১৯৬৮ সালে প্রকৃতিবিজ্ঞানী গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য। পথিক এলেন সেই ঐতিহ্যেইে।

অনিতা অগ্নিহোত্রী গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক। মানুষের জীবনকে দেখেন অন্য চোখে। উন্নয়নের নামে আদিবাসী মানুষের জীবন এবং প্রকৃতি-পরিবেশকে কী ভাবে নির্বিচারে আমরা হত্যা করে চলেছি, তা নিয়ে অনিতা বারংবার সতর্ক করে দেন। তাঁর নতুন উপন্যাস ‘মহানদী’ও (দে’জ) তাঁর দায়বোধের দর্পণ।

তিনটি বই, তিন লেখকের জীবনদর্শনের প্রতীক। সেখানেই আনন্দ-ঐতিহ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন