পাচার হয়ে যাওয়া দিল্লির তিন তরুণী উদ্ধার শিলিগুড়ি থেকে

আটক থাকা অবস্থায় লুকিয়ে মোবাইল থেকে দাদাকে হোয়াটসঅ্যাপ করে ঘরের ছবি পাঠিয়েছিল বোন। আর সেই হোয়াটসঅ্যাপের সূত্র ধরেই শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার করা হল পাচার হয়ে যাওয়া দিল্লির তিন তরুণীকে। বুধবার শিলিগুড়ির বিভিন্ন বার-এ অভিযান চালিয়ে তিন তরুণীকে উদ্ধার করা হলেও পাচারকারীদের এক জনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

Advertisement

দীক্ষা ভুইয়াঁ

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১৮:৫৬
Share:

আটক থাকা অবস্থায় লুকিয়ে মোবাইল থেকে দাদাকে হোয়াটসঅ্যাপ করে ঘরের ছবি পাঠিয়েছিল বোন। আর সেই হোয়াটসঅ্যাপের সূত্র ধরেই শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার করা হল পাচার হয়ে যাওয়া দিল্লির তিন তরুণীকে। বুধবার শিলিগুড়ির বিভিন্ন বার-এ অভিযান চালিয়ে তিন তরুণীকে উদ্ধার করা হলেও পাচারকারীদের এক জনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

Advertisement

উদ্ধার হওয়া তরুণীদের বয়ান থেকে পুলিশ জেনেছে, কয়েক মাস আগে দিল্লির বাসিন্দা ওই তিন তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ হয় দিল্লির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের এক তরুণীর। সেই তরুণীই একটি বড় ইভেন্টে কাজ রয়েছে বলে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ওই তিন জনের। এঁদের মধ্যে এক জন দিল্লি হাইকোর্টের এক আইনজীবীর বোন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অভিযোগ, এক মাসের জন্য ওই তিন তরুণীকে চল্লিশ হাজার টাকা করে দেওয়ার চুক্তিতে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ।

শেষ পর্যন্ত তাঁদের যে শিলিগুড়িতে কার্যত বন্দিদশায় কাটাতে হবে তার আঁচ পর্যন্ত করতে পারেননি তিন তরুণী। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দিল্লি থেকে শিলিগুড়ি আসার জন্য বাগডোগরা পর্যন্ত তিন জনের বিমানের টিকিট কেটে দেওয়া হয়। সেই মতো গত ৫ ডিসেম্বর তিন তরুণী দিল্লি থেকে সোজা বাগডোগরা পৌঁছন। সেখানে তাঁদের জন্য গাড়িরও ব্যবস্থা ছিল। শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পরে শিলিগুড়িতে সেবক রোডে়র একটি হোটলে তাঁদের ঠাঁই হয়। সেখান থেকে ভক্তিনগর এলাকার একটি দোতলা বাড়িতে।

Advertisement

ওই তিন তরুণীর অভিযোগ, ভক্তিনগরের বাড়িতে তিন জনকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। মোবাইল ব্যবহারও করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। এর পরই তিন জন জানতে পারেন তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে শিলিগুড়ির বারে নর্তকী হিসাবে কাজ করার জন্য। দিল্লির সংস্থাটি তাঁদের বিক্রি করে দিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরই ওই তিন জনের এক জন (আইনজীবীর বোন) কোনও মতে নিজের মোবাইল থেকে লুকিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে দিল্লিতে নিজের দাদার মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ করে নিজের এবং বাকি দু’জনের কথা জানান। ওই আইনজীবী কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দিল্লিরই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা -র কাছে ফোন করে বিষয়টি জানান। বুধবার বিকেলেই আইনজীবীর বোনকে উদ্ধার করে বেসরকারি ওই সংস্থা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এর পরই ভক্তিনগর পুলিশের নেতৃত্বে বুধবার রাত পর্যন্ত শিলিগুড়ির বিভিন্ন বারে তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় বাকি দুই তরুণীকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, দু’জনকে বারের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হলেও ভক্তিনগরের এবং সংলগ্ন এলাকাতে এরকম প্রচুর মেয়েকে এনে আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশ শিলিগড়ির বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের খোঁজ পেতে তল্লাশি চালাচ্ছে। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ওই তিন তরুণীর সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে এই পাচার চক্রটির জাল বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে। এ রাজ্যের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, দিল্লিতেও সক্রিয় সংস্থাটি। তারা তরুণীদের কিনে নেয় এবং দেহ ব্যবসায় নামায় বলে আমাদের মনে হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন