TMC and CBI

বিজেপি কর্মী খুনে সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম থাকা তিন তৃণমূল নেতা-নেত্রী এখন আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন, অপেক্ষা দলীয় নির্দেশের

২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছিল। ওই দিন রাতেই কাঁকুড়গাছিতে গণপিটুনিতে মারা যান বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় একঝাঁক তৃণমূল নেতা-কর্মীর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫২
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কাঁকুড়গাছির খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম থাকা তিন তৃণমূল নেতা-নেত্রী আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু করেছেন। পাশাপাশিই, দলের শীর্ষনেতৃত্ব তাঁদের কী নির্দেশ দেন, তারও অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছিল। ওইদিন রাতেই কাঁকুড়গাছিতে গণপিটুনিতে মারা যান বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় একঝাঁক তৃণমূল নেতা-কর্মীর। চার বছর পরে সেই ঘটনায় বুধবার সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছে, তাতে নাম রয়েছে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষের। ওই নেতারা এখনও হাতে কোনও আইনি নথি পাননি বা চার্জশিটের প্রতিলিপিও পাননি বলে তাঁদের দাবি। তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন সংবাদমাধ্যম থেকে।

তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের দাবি, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বিজেপি কর্মী অভিজিতের খুনের বিষয়টি রাজনৈতিক কারণে আবার খুঁচিয়ে তোলা হচ্ছে। তাতে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের।

Advertisement

চার্জশিটে নাম রয়েছে মেয়র পারিষদ স্বপনের। যিনি উত্তর কলকাতা জেলা আইএনটিটিউইসি-র সভাপতিও। বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্বপন বলেন, ‘‘বুধবার বিকালে আমরা সংবাদমাধ্যম দেখে জানতে পারি, সিবিআই তাদের চার্জশিট আমাদের নাম দিয়েছে। কিন্তু ওই সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র এখনও আমি পাইনি। হাতে কাগজপত্র পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব। দল যা নির্দেশ দেবে, তা-ও আমাদের মেনে চলতে হবে।’’ উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের স্বপন-ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রকাশ্যে না-বলতে চাইলেও ইতিমধ্যেই স্বপন নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তবে দলীয় নির্দেশ না-পাওয়া পর্যন্ত প্রকাশ্যে কিছু জানাতে চাইছেন না তিনি। বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ এখন অসুস্থ। বিধানসভার অধিবেশনেও তাঁকে দীর্ঘদিন দেখা যায় না। যোগ দেন না বিধানসভার কমিটির বৈঠকেও। বেলেঘাটার বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও পরেশ। কলকাতা পুরসভার পুর অধিবেশনে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি যোগ দিতে পারেননি অসুস্থতার জন্যই। তবে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অসুস্থ পরেশও সিবিআই চার্জশিটে তাঁর নাম থাকার বিষয়টি জেনেছেন। তিনিও ব্যক্তিগত স্তরে আইনি পরামর্শ নিতে চলেছেন। স্বপনের পাশাপাশি চার্জশিটে নাম রয়েছে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়ারও। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘চার্জশিট হাতে না পেলে এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করব না।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, পাপিয়া দলীয় নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।

২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছিল। সেই রাতেই খুন হন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ। উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, ওইদিন বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের গণনায় দেরি হচ্ছিল। যে কারণে বেলেঘাটার তৃণমূল প্রার্থী পরেশ এবং স্বপন ও পাপিয়া ছিলেন গণনাকেন্দ্র নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ফলে সিবিআই বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই তিন নেতা-নেত্রীর নাম চার্জশিটে রেখেছে। এর জবাব তৃণমূল নেতৃত্ব যেমন আইনগত ভাবে দেবেন, তেমনই দেওয়া হবে রাজনৈতিক ভাবেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement