যৌথ পরিবার প্রায় ইতিহাস। কয়েকশো স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাটে এখন সব পরমাণু-পরিবারের বাস। বাবা-মা আর এক সন্তান, বড় জোর দুই। বেড়ে ওঠার এই সীমিত পরিসরে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, জিনিসপত্র ভাগ করে নেওয়ার প্রবণতা আর শিশুদের মধ্যে তৈরিই হচ্ছে না। যথাযথ শিক্ষার অভাবে শিশু হয়ে উঠছে আত্মকেন্দ্রিক। সমস্যা সমাধানের উপায় বাতলাচ্ছেন মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম।
• মনে রাখবেন বাবা-মাকে দেখেই সন্তানের অভ্যাস তৈরি হয়। ফলে, আপনি নিজে কতটা মিলেমিশে থাকছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
• মুখে এক, কাজে আর এক করবেন না। সন্তানকে জিনিসপত্র ভাগ করে ব্যবহার করতে বলবেন, আর নিজে তার ঠিক উল্টোটা করবেন না।
• মিলেমিশে থাকা, জিনিসপত্র ভাগ করে নেওয়ার উপকারিতা নিয়ে পুরাণ, রূপকথার নানা গল্প রয়েছে। সন্তানকে সেগুলো বলুন। গল্পের ছলেই মনে গেঁথে যাবে নীতিবোধ।
• সন্তানকে নিজের জীবনের গল্পও বলতে পারেন। ওকে বুঝিয়ে দিন, মিলেমিশে থেকে আপনি নিজে কতটা উপকৃত হয়েছেন।
• সন্তানের জন্মদিন বা বিশেষ কোনও দিন উদ্যাপনে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা অনাথ আশ্রমে যেতে পারেন। এই ধরনের পরিবেশ আত্মকেন্দ্রিকতা ভুলিয়ে দেয়।
• বাচ্চাকে নিয়ে সামাজিক পরিসরে মেলামেশা বাড়ান। শিশুরা এতে সহজে শেখে, বিভিন্ন বয়সীদের প্রতি কী আচরণ করতে হয়, কী ভাবে সামাজিক হয়ে উঠতে হয়।
• পিঠোপিঠি দুই সন্তান হলে সব জিনিস দু’টো করে কিনবেন না। একই বই পড়ে ভাই-বোন দু’জনেই কৃতী হতে পারে, এটা আপনিও মনে রাখুন।
• স্কুলে যাতে সন্তান জিনিস ভাগ করে ব্যবহার করে, সেটা শেখান। ওকে বোঝান প্রয়োজনে বন্ধুকে পেন্সিল-রবার দাও, টিফিন ভাগ করে খাও।
• একই সঙ্গে সন্তানকে বোঝান পরীক্ষার সময় খাতা বন্ধুকে দেখানো যায় না। ওটা নিজের মূল্যায়ন।
• সমস্যা তৈরি হওয়ার আগে সতর্ক হন। একদম ছোট থেকেই নজর রাখুন সন্তান যেন আত্মকেন্দ্রিক না হয়।
জীবনে মিলেমিশে থাকার আনন্দ অপার। সেই স্বাদ সন্তানকে পেতে দিন।
সাক্ষাৎকার: দেবাঞ্জনা ভট্টাচার্য