সিন্ডিকেটে নয়, এ বার লিখিত ফরমান তৃণমূলে

সিন্ডিকেট নিয়ে শাসক দলেরই নানা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছে বারবার। নেতা-কর্মীদের নাম জড়িয়ে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে এ বার দলীয় নেতৃত্বের তরফে লিখিত ফরমান দিয়ে নির্দেশ জারি করা হল, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরাসরি বা অন্য কোনও ভাবে জড়িত থাকতে পারবেন না। সিন্ডিকেট-সংঘর্ষের জন্য সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার শিরোনামে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। লিখিত নির্দেশ জারি করতে এগিয়ে এসেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

সিন্ডিকেট নিয়ে শাসক দলেরই নানা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছে বারবার। নেতা-কর্মীদের নাম জড়িয়ে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে এ বার দলীয় নেতৃত্বের তরফে লিখিত ফরমান দিয়ে নির্দেশ জারি করা হল, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরাসরি বা অন্য কোনও ভাবে জড়িত থাকতে পারবেন না।

Advertisement

সিন্ডিকেট-সংঘর্ষের জন্য সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার শিরোনামে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। লিখিত নির্দেশ জারি করতে এগিয়ে এসেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বই।

জেলা কমিটির জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘দলীয় নেতৃত্ব বা কোনও কর্মীর ইটভাটা, ভেড়ি, সিন্ডিকেট ও জমির কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত থাকা যাবে না’। এত দিন দলীয় বৈঠকে বা বিভিন্ন মঞ্চে এমন নির্দেশ দিয়ে আসছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী-সহ দলের নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু তার পরেও কাজ বিশেষ হয়নি। তাই মৌখিক নির্দেশের পরিধি ছাড়িয়ে কিছুটা সিপিএমের পার্টি চিঠির ঢঙে দলের অবস্থান কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। যে ঘটনা তৃণমূলে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে এই প্রথম।

Advertisement

সামনেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট দক্ষিণ আসনে বিধানসভা উপনির্বাচন। তার আগে মঙ্গলবার মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূল দফতরে দলের নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে যে দলীয় বৈঠকের প্রক্রিয়া চালু হল, পরপর এ বার তা চলবে অন্যান্য জেলাতেও।

সিন্ডিকেট এবং নানা কারবারে জড়িয়ে দলের নেতা-কর্মীদের বিবাদে রাশ টানতে না পারলে সামনের বছর ৭০-এর উপর পুরসভার ভোট এবং তার পরের বছর বিধানসভা ভোটে যে তার প্রভাব পড়তে পারে, এখন থেকেই বুঝতে পারছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই এমন লিখিত বার্তা জারি করে কর্মীদের সতর্ক করার চেষ্টা হচ্ছে বলেই তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা। উত্তর ২৪ পরগনায় যার সূত্রপাত হল বিধানসভা উপনির্বাচনের আগেই।

বৈঠকের পরে এ দিন সিন্ডিকেট নিয়ে মুকুলবাবু অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তবে জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক স্পষ্টই বলেছেন, “দলের কোনও নেতা-কর্মী যদি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকেন তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ওই নির্দেশিকায় জেলার সমস্ত ব্লক ও টাউন সভাপতিকে বলা হয়েছে, ‘দলের অনুমোদন ছাড়া যত্রতত্র দলীয় কার্যালয় খোলা যাবে না। অনুমতি ব্যতীত দলীয় কার্যালয়গুলি ৭ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে’। তা না হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নির্দেশিকায় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে! যত্রতত্র দলনেত্রীর ছবি অন্যান্যদের সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না বলেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন