পথে-আদালতে বিজেপি’কে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত শাসক

রাজ্যে নোয়াপাড়া ও উলুবেড়িয়ায় জোড়া উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মিত ঘটনা। যা দেখে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে বলছেন, বিরোধী পরিসরে দ্রুত উঠে এসে বিজেপি-ই এখন তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

আদালতের সবুজ সঙ্কেত নিয়ে পথে নামার পরেও বারংবার আক্রমণের অভিযোগ বিজেপি যুব মোর্চার ‘প্রতিরোধ সঙ্কল্প যাত্রা’য়। সেই যাত্রা থেকে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্যে’র অভিযোগে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে গড়িয়াহাট ও হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের। আবার উলুবেড়িয়ায় মুকুল রায়ের সভার আগে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ।

Advertisement

রাজ্যে নোয়াপাড়া ও উলুবেড়িয়ায় জোড়া উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষই এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়মিত ঘটনা। যা দেখে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে বলছেন, বিরোধী পরিসরে দ্রুত উঠে এসে বিজেপি-ই এখন তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। তাই সংঘর্ষ বাধছে রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই শাসক দলের। রাজনৈতিক শিবিরের অন্য একাংশ বলছে, একটা বাইক যাত্রা নিয়ে আদালতে পড়ে থেকে এবং রাস্তায় বিতণ্ডা বাধিয়ে রাজ্যের শাসক পক্ষই বিজেপি-র ‘গুরুত্ব’ বাড়িয়ে তুলছে!

হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে দু’দিন স্থগিত থাকার পরে সোমবার সিমলায় বিবেকানন্দের বাড়ির সামনে থেকে শ’দেড়েক মোটরবাইক নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিজেপি-র যুব মোর্চা। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে যাত্রা শুরুর পরে গৌরীবাড়ির কাছে মিছিলকে কালো পতাকা দেখায় তৃণমূল। বিজেপি-র কর্মীদের উপরে তখনই হামলা হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি বাধে। বিজেপি-র অভিযোগ, দিনভর বারাসত, আমডাঙা, চাকদহ, রানাঘাটে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। দিনের শেষে কৃষ্ণনগরে পৌঁছেছে বিজেপি-র যাত্রা। আজ, মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর থেকে শুরু হয়ে যাত্রা বহরমপুর পৌঁছনোর কথা।

Advertisement

কিন্তু এ দিন কেন নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে এই যাত্রা শুরু হয়েছে, তা নিয়ে হাইকোর্টে অভিযোগ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল(এ জি) কিশোর দত্ত। তাঁর বক্তব্য, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে সময়মতো মিছিল না বেরোনোয় প্রশাসনিক অসুবিধা হয়েছে। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ যুব মোর্চার আইনজীবী কৌঁসুলি সপ্তাংশু বসুকে নির্দেশ দেয়, নির্দিষ্ট সময়েই মিছিল বার করতে হবে। খুব বেশি হলে মিনিটপনেরো ছাড় দেওয়া যেতে পারে। দিলীপবাবুর অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অনেক জায়গায় তৃণমূল বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কুয়াশাও ছিল। তাই কর্মীদের পৌঁছতে দেরি হয়েছে।’’

তার আগে এ দিন এ জি ডিভিশন বেঞ্চে অভিযোগ করেন, মোটরবাইক মিছিলে যোগ দিতে এসেছেন উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও ওই সব রাজ্যের। আদালত আয়োজকদের মিছিল বন্ধ করার নির্দেশ দিক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘যাঁরা যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা দেশেরই নাগরিক। আদালত তাঁদের যোগ না দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে না।’’ এ জি আরও জানান, যুব মোর্চার যাত্রা পতাকা নেড়ে উদ্বোধন করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। মোর্চার যাত্রা আসলে বিজেপি-রই! তখন বেঞ্চ মোর্চার কৌঁসুলি সপ্তাংশুবাবুকে নির্দেশ দেয়, যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার বিজেপি-র কোনও পদে রয়েছেন কি না, তা নথি-সহ আদালতকে জানাতে। বিকেলে সপ্তাংশুবাবু আদালতে নথি পেশ করে জানান, যুব মোর্চা বিজেপি-র যুব সংগঠন। আর মোর্চার অনুষ্ঠানে বিজেপি সভাপতির যোগ দিতে আইনত কোনও বাধা নেই।

গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে মুকুল এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘রাজ্যে যে ভাবে বিজেপি-র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হামলা চলছে, তাতে মনে হচ্ছে সরকার উগ্রপন্থীদের স্পনসর করছে! মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন