তৃণমূল কাউন্সিলর মিঠুন টিকাদারকে দলীয় ওয়ার্ড অফিসে ঢুকে গুলি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার রাতে বজবজের তৃণমূল কাউন্সিলর মিঠুন ঠিকাদারের উপরে হামলার ঘটনার সঙ্গে নদিয়ার হাঁসখালির তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনার মিল পাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা। সরস্বতী পুজোর আগের দিন জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্যে সত্যজিতকে গুলি করে পালিয়ে গিয়েছিল আততায়ীরা। এ ক্ষেত্রেও জনবহুল চিত্রিগঞ্জ বাজারের মধ্যে তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিসে ঢুকে মিঠুনকে দু’টি গুলি করার পরে বোমা ফাটিয়ে মোটরবাইকে চড়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
সোমবার রাতে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মিঠুনের অস্ত্রোপচার হয়। তাঁর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। দু’টি গুলিই তাঁর শরীর ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের কর্তারা।
বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলার পিছনে রয়েছে বলে সোমবার রাতেই দাবি করেছিলেন বজবজ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্ত। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীও এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাসের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে সব দুষ্কৃতীই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ওরা নিজেরাই লড়াই করে মরে যাবে। বিজেপি-কে কিছুই করতে হবে না।’’
স্থানীয় তৃণমূলের একটি সূত্রেরও দাবি, মিঠুন যে দুই দুষ্কৃতীর নাম বলেছেন, তাদের সঙ্গে তৃণমূলের বজবজ ব্লক সভাপতি তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমন্ত বৈদ্যের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পুলিশ সেই বয়ানের ভিডিয়ো সংগ্রহ করেছে বলে খবর। পাশাপাশি, ওই দুই অভিযুক্তের সঙ্গে শ্রীমন্তের ছবিও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দুই অভিযুক্তই এখন এলাকাছাড়া। তাদের বাড়িতেও তালা ঝুলছে।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীমন্ত এ দিন স্পষ্টই বলেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘বজবজ এলাকায় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। একটাই গোষ্ঠী, তা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর আমি এক জন রাজনৈতিক নেতা। আমার পাশে এসে নানা লোক ছবি তোলে। ওরাও হয়তো তুলেছে।’’
মিঠুনের স্ত্রী সীমা ঠিকাদার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠে সব বলবে।’’