TMC

Raj Chakroborty: আমার পদটা ক্রিয়েট করা হয়েছে, মাননীয়ার সম্মান রাখব: রাজ, বিশেষ নজর থিয়েটারে

রাজ জানিয়েছেন, আপাতত এই পদের দায়িত্ব বুঝে নেওয়াটাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে কাজের ব্যাপারে পরামর্শ নেবেন তৃণমূল নেত্রীর কাছেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২১ ১৩:৪০
Share:

রাজ চক্রবর্তী।

তৃণমূলের সাংস্কৃতিক সেলের প্রধান হওয়ার পর রাজ চক্রবর্তী বলছেন, আপাতত এই পদের সমস্ত দায়িত্ব বুঝে নেওয়াটাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে একই সঙ্গে জানাচ্ছেন, জাতীয় স্তরে বাংলার সংস্কৃতির শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সচেষ্ট হবেন তিনি। পাশাপাশি থিয়েটার এবং যাত্রা-র দিকে বিশেষ নজর দিতে চান বলেও উল্লেখ করলেন। একই সঙ্গে তিনি মনে করছেন, যেহেতু নতুন পদ তৈরি করে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাই তিনি তৃণমূল নেত্রীর সম্মান রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। নতুন পদে বসার পর কী পরিকল্পনা তাঁর? আনন্দবাজার ডিজিটালকে রাজ বললেন, ‘‘এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই। আমাকে প্রথমে জানতে হবে যে দায়িত্ব আমি পেয়েছি, তাকে কী ভাবে পালন করব। কী ধরনের কাজ করতে হবে, সেটা জানতে হবে। তার পর পরিকল্পনার কথা।’’

Advertisement

তবে তাঁর ভাবনায় কী কী রয়েছে, তারও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন রাজ। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা সংস্কৃতির তীর্থক্ষেত্র। এক একটি জেলার নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। আমার একটা কাজ হবে, জেলার সংস্কৃতিকে আরও সামনের সারিতে নিয়ে আসা। সেই সংস্কৃতি এবং তাঁর সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের ভাল রাখা। তাঁরা যাঁতে বিনা সমস্যায় নিজেদের শিল্পে মনোনিবেশ করতে পারেন, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে। যাতে তাঁরা নিজেদের শিল্পকে সবার সামনে আনতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার ইচ্ছে আছে। সেই সঙ্গে থিয়েটার এবং যাত্রার দিকেও নজর দেওয়ার কথা ভেবেছি।’’

তৃণমূলের সাংস্কৃতিক সেলের প্রধান এত দিন কেউ ছিলেন না। কারণ তৃণমূলের কোনও সাংস্কৃতিক সেলই ছিল না। বাংলার সংস্কৃতি, শিল্পীদের ভাল-মন্দ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। শনিবার তৃণমূলের তরফে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের ব্যারাকপুরের বিধায়ককে। রাজ জানিয়েছেন, তাঁর কথা ভেবেই এই পদটি তৈরি করা হয়েছে, তিনি চেষ্টা করবেন মমতার সম্মান রাখার।

Advertisement

টলিউডের পরিচালক রাজ রাজ্যের শাসক দলের সাংস্কৃতিক সেলের প্রধান হওয়ার পর সিনেমার সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের অনেকটাই সুবিধা হল, এমন ভেবেছিলেন অনেকেই। রাজ অবশ্য বলেছেন, ‘‘এ রকম কোনও কথা নেই। বরং থিয়েটার নিয়ে বেশ কিছু ভাবনা চিন্তা আছে আমার।’’ অতিমারির কারণে এই শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজে থিয়েটার থেকে উঠে আসা একজন মানুষ। রাজ্যে কত থিয়েটার দল আছে আমি জানি। বেশ কিছু বছর আগেও রাজ্যে থিয়েটারের প্রতিযোগিতা হত। সেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমার ইচ্ছে আছে থিয়েটারের উন্নতির দিকটা দেখা। সিনেমা জগতও সমান গুরুত্ব পাবে। প্রচুর শিল্পী আছে বাংলার জেলায়। তাঁদের যদি একটু স্বীকৃতি দেওয়া যায়, সেটা দেখতে হবে। কী ভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটা দেখব।’’

এর আগে রাজ্যের বাউল শিল্পীদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার টেলিভিশন শিল্পীদের সম্মানে এবং বিশেষ সম্মানের ঘোষণাও করেছিলেন তিনি। রাজও কি লোক শিল্পীদের তেমন কোনও বৃত্তি দেওয়ার কথা ভাবছেন? রাজের কথায়, ‘‘বৃত্তির কথা এখনই আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে যাতে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটা দেখব।’’

এই বিষয়ে রাজ যে তৃণমূলনেত্রীকেই অনুসরণ করতে চান, তা-ও জানিয়ে রাখলেন। রাজের কথায়, ‘‘তৃণমূল নেত্রী এতদিন নিজে এই বিষয়গুলি দেখেছেন। পাশাপাশি আমাকে এই পদে বসানোর ব্যাপারেও নিশ্চয়ই কিছু ভাবনা চিন্তা রয়েছে ওঁর। আমি ওঁর সম্মান রাখার চেষ্টা করব। ওঁর থেকেই কাজের ব্যাপারে পরামর্শ নেব।’’ তবে এর পাশাপাশি দলের বাকি নেতা নেত্রীদের থেকেও সাহায্য চাইবেন বলেও উল্লেখ করলেন তিনি।

গত দু’বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের দায়িত্ব সামলেছেন রাজ। উৎসবের কমিটি কেআইএফএফ-এর চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। আবার কঠিন আসন ব্যারাকপুরেও বিপুল ভোটে জিতেছেন। বিনয়ী এবং নম্র স্বভাবের এই পরিচালক শাসক দলের বিধায়ক হয়েও টলিউডের বিরোধী গোষ্ঠীর অভিনেতা অভিনেত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেন। এই সব বিষয়ই রাজকে সাংস্কৃতিক সেলের প্রধান করার নেপথ্যে কাজ করেছে বলে মত রাজনৈতিক এবং শিল্প মহলের।

এমন একটা গুরুদায়িত্ব পাওয়ার পর কেমন লাগছে, স্ত্রী শুভশ্রীই বা কী বলছেন,প্রশ্ন রাখা হয়েছিল তাঁর কাছে। রাজ বললেন, ‘‘শুভশ্রী বলেছে, আরও ব্যস্ত হয়ে গেলে। তবে ও মজা করেই বলেছে। আমি কাজ ভালবাসি। কাজের সুযোগ পেয়েছি। তাই ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন