নবান্ন-রাজভবন সঙ্ঘাতে রাজ্যপালের ঢাল রাজ্যের বিজেপি, সংসদে আলোচনা চায় তৃণমূল

শনিবার আবার রাজ্য সরকারকে বিঁধে ধনখড় বলেন, ‘‘আমি নিশ্চয় লক্ষ্মণরেখা মেনে চলব। কিন্তু এটা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০১
Share:

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সংসদ ভবন থেকে বেরোচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার। পিটিআই

রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে এ বার খোলাখুলি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পাশে দাঁড়াল বিজেপি। পাশাপাশি, রাজ্যপালের ভূমিকায় অসন্তোষ জানিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তা নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

শনিবার আবার রাজ্য সরকারকে বিঁধে ধনখড় বলেন, ‘‘আমি নিশ্চয় লক্ষ্মণরেখা মেনে চলব। কিন্তু এটা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’’ তার পরই সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রায় সব বিষয়েই রাজ্যপালের বক্তব্যকে সমর্থন করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কোথাও গেলে অপ্রিয় সত্য সামনে আসতে পারে। সেই কারণেই তাঁকে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পাল্টা জবাব, ‘‘রাজ্যপাল যাঁদের উদ্দেশে লক্ষ্মণরেখা মানার কথা বলছেন, তাঁরা সকলেই তা মেনে চলছেন। কিন্তু আমি যত দূর বুঝি উনি যাঁদের এর বাইরে রাখছেন, এ রাজ্যে তাঁরাই লক্ষ্মণরেখা মানছেন না।’’

এ দিনই দিল্লিতে লোকসভার সর্বদল বৈঠকে ধনখড়ের প্রসঙ্গ তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে রাজ্যপাল একের পর এক কর্মসূচি নিচ্ছেন। সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। স্পিকার ওম বিড়লার কাছে তিনি জানতে চান, এটা কি সংবিধান সম্মত? বিষয়টি নিয়ে লোকসভার আসন্ন অধিবেশনে আলোচনাও চান তাঁরা। স্পিকার জানান, কার্যোপদেষ্টা কমিটিতে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

কলকাতায় এ দিন এক অনুষ্ঠানে ধনখড় বলেন, ‘‘আমি যা বলছি, তারই রাজনৈতিক অর্থ করা হচ্ছে। আমি তা-ই করছি, এক জন রাজ্যপাল হিসেবে যা করা উচিত।’’ তার পরেই দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যপালের গতিবিধি দেখার জন্য আলাদা লোক আছে। তিনি তো বলছেন, যা করছেন তা সাংবিধানিক এক্তিয়ারের মধ্যে থেকেই।’’ এই টানাপড়েনে রাজ্যপালকে ‘বিজেপির লোক’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনখড় নিজে তা নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও জবাব দিয়েছেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কিছু বললেই তাঁর গায়ে বিজেপির স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হচ্ছে।’’ চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘জাতীয় সড়কের প্রশংসা আর রাজ্য সড়কের নিন্দা করে রাজ্যপাল নিজেই নিজের গায়ে স্ট্যাম্প লাগিয়েছেন। তাঁর হয়ে রাজ্য বিজেপির এ সব কথায় তা-ই প্রমাণ হচ্ছে।’’ এ দিন ডাক বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা কখনই ছাড়বেন না।’’

সম্প্রতি শান্তিপুরের রাসমেলা ও ফরাক্কার একটি কলেজের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তা না পাওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানান তিনি। হেলিকপ্টারে মুখ্যমন্ত্রীর দুই ২৪ পরগনা সফরের কথাও তোলা হয়। যার পরে রাজ্যপালকে বিঁধে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে নবান্ন। শুক্রবারই চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল যে কারণে হেলিকপ্টার চেয়েছিলেন, সেটা প্রশাসনিক কোনও কাজ নয়।’’ এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করতে পারেন, আর রাজ্যপাল চাইলে বলা হচ্ছে অপচয়! খেলা, মেলা, লীলায় এত খরচ হচ্ছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement