(বাঁ দিকে) বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে এই চিঠিই দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অরূপ বিশ্বাস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিহারের উদাহরণ টেনে রাজ্যের বুথ স্তরের আধিকারিকদের (বিএলও) হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো দেখিয়ে এ বার নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকল তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অরূপ বিশ্বাস শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যাখ্যা করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে চিঠি লিখেছেন। অবিলম্বে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আর কেউ যাতে আগামী দিনে নির্বাচনের কাজের সঙ্গে যুক্ত কোনও সরকারি কর্মীকে ভয় দেখাতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।
কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে অরূপ লিখেছেন, ‘‘আমাদের ভোটার তালিকার অখণ্ডতা রক্ষার দায়িত্ব যে সমস্ত সরকারি কর্মীকে দেওয়া হয়েছে, খুব পরিকল্পিত ভাবে তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে। যদি বিষয়টিকে এখন থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা না-হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গে স্বচ্ছ, অবাধ নির্বাচন সম্ভব হবে না।’’ এর পরেই শুভেন্দুর মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন অরূপ। ওই মন্তব্য আগেই তৃণমূলের সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছিল। তার লিঙ্ক চিঠির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অরূপের বক্তব্য, ‘‘এসআইআর ঘোষণার পর শুভেন্দুর মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মুখে এই ধরনের মন্তব্য ফৌজদারি অপরাধের শামিল। তা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫১ ধারার আওতায় পড়ে।’’
শুভেন্দুর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কমিশনের মোট তিনটি পদক্ষেপ চেয়েছে তৃণমূল। প্রথমত, বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে এবং পুলিশকে এফআইআরের নির্দেশ দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, সকল বিএলও এবং অন্য নির্বাচনী আধিকারিক যাতে রাজনৈতিক ভীতিপ্রদর্শন থেকে দূরে থাকতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কোনও প্রতিরক্ষামূলক নির্দেশিকা জারি করতে হবে। তৃতীয়ত, বিজ্ঞপ্তি জারি করে সকল রাজনৈতিক দলকে বলে দিতে হবে, নির্বাচনী আধিকারিকদের ভয় দেখালে আইন অনুযায়ী কী কী শাস্তি হতে পারে।
ঠিক কী বলেছিলেন শুভেন্দু? কিছু দিন আগে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বিহারের ৫২ জন বিএলও কিন্তু এখনও জামিন পাননি। আপনাদের কিন্তু জেলে কাটাতে হবে। জেলে যাওয়ার জন্য তথ্য-নথি আমরা জোগাড় করে দেব।’’ তাঁর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধেই আসরে নেমেছে রাজ্যের শাসকদল। শুক্রবার রাতে কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালে এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে গত সোমবার এসআইআর ঘোষণা করেছে কমিশন। ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। বিএলওরা বাড়ি বাড়ি নির্দিষ্ট ফর্ম নিয়ে যাবেন। ফর্ম পূরণের পর সেই সংক্রান্ত তথ্য, নথি যাচাই করে নির্দিষ্ট অ্যাপে আপলোড করার কাজও তাঁদের করতে হবে। এই বিএলওদেরই ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে।