টাকা নিয়ে জমি দেননি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক হিসেবে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে তাঁকে সরব হতে দেখা গিয়েছে একাধিক বার। তিনি উত্তরপ্রদেশে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক আসিফ খান। এখন তাঁর বিরুদ্ধেই জমি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার রাতে ওই তৃণমূল নেতার পার্ক সার্কাসের বাড়িতে তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৫
Share:

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক হিসেবে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে তাঁকে সরব হতে দেখা গিয়েছে একাধিক বার। তিনি উত্তরপ্রদেশে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক আসিফ খান। এখন তাঁর বিরুদ্ধেই জমি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার রাতে ওই তৃণমূল নেতার পার্ক সার্কাসের বাড়িতে তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

সল্টলেক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ জুলাই নিউ টাউন থানায় আসিফের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন মহম্মদ ওয়াহিদ সিদ্দিকী নামে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, রাজারহাট-নিউ টাউনে ইকো পার্কের কাছে ৪০০ একর জমি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু দফায় দফায় অগ্রিম টাকা নেওয়া সত্ত্বেও আসিফ তাঁকে জমি দেননি।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ২০১২ সাল থেকে প্রতিশ্রুতি অনুসারে কয়েক কিস্তিতে আসিফকে টাকা দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। কিন্তু জমি না-পেয়ে তিনি গত মাসের ১৫ তারিখে যোগাযোগ করেন সল্টলেক পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের সঙ্গে। ২৪ জুলাই নিউ টাউন থানায় আসিফের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন ওয়াহিদ।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, আসিফ রাজারহাট-নিউ টাউন এলাকার এক ব্যবসায়ী তথা স্থানীয় তৃণমূলকর্মীর সহায়তায় উত্তরপ্রদেশের ওই ব্যবসায়ীর কাছে জমি বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিউ টাউনের ইকো পার্কের কাছে ওই জমির মালিকানা স্বত্ব নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। তাই ওই জমি কোনও ভাবেই হস্তান্তর করা যাবে না। সে-ক্ষেত্রে আসিফ ওই জমি কী ভাবে উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ীকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, এই কারণে একাধিক বার আসিফকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। ওই জমির নথিপত্রও খতিয়ে দেখা হয়েছে।

অভিযোগকারী মহম্মদ ওয়াহিদ পুলিশকে জানিয়েছেন, আসিফ জমি বিক্রির প্রস্তাব দেওয়ার সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। ফলে আসিফের উপরে তাঁর বিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। তবে উত্তরপ্রদেশের ওই ব্যবসায়ী ২০ কোটি নগদ টাকা কী ভাবে দফায় দফায় আসিফকে দিয়েছিলেন, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ এর আগেই দু’-দু’বার নোটিস পাঠিয়ে আসিফকে সল্টলেক কমিশনারেটে ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের ডাকে সাড়া দেননি শাসক দলের ওই নেতা। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাতে পার্ক সার্কাসে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। ঘটনার পর থেকে আসিফ অবশ্য ওই বাড়িতে তিনি থাকছেন না বলে জানান তদন্তকারীরা। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে ফের নোটিস লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই অভিযোগের ব্যাপারে আনন্দবাজারের তরফে আসিফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি মোবাইল বন্ধ করে রাখায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন