inner conflict

বর্ধমানে ক্লাব দখলের জেরেই কি খুন তৃণমূল কর্মী, বিজেপি-র দিকে অভিযোগ নিহতের স্ত্রীর

পিরবাহারাম ডাঙাপাড়ায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে শনিবার রাত থেকেই অশান্তি ছিল। তার পর রবিবার রাতে আকবরের উপর হামলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৫১
Share:

মহম্মদ আকবর। —নিজস্ব চিত্র।

ক্লাবদখলকে কেন্দ্র করে বছর দেড়েক ধরে চলছিল অশান্তি। তার জেরে রড-লাঠি-কুডুল দিয়ে তৃণমূলের এক কর্মীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল পাড়ারই এক দল যুবকের বিরুদ্ধে। হামলায় নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ, আক্রমণকারীরা বিজেপি-র লোকজন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি-র দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছেন ওই ব্যক্তি। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা রয়েছে বর্ধমান শহরের পিরবাহারাম ডাঙাপাড়া এলাকায়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, নতুন করে অশান্তি রুখতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মহম্মদ আকবর (৪৮) ওরফে কালো। বর্ধমান শহরের পুরনো এলাকা পিরবাহারাম ডাঙাপাড়ায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে শনিবার রাত থেকেই অশান্তি ছিল। তার পর রবিবার রাতে আকবরের উপর হামলা হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিরবাহারামে উত্তেজনা ছড়ায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। পিরবাহারামে পাড়ার এক দল যুবক দিঘা বেড়াতে যাওয়ার খবর জানিয়ে ব্যানার টাঙিয়েছিলেন। রাতে সেই ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, একটি দোকানে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগও করা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পাড়ায় চাপা উত্তেজনা ছিল। রবিবার সকালেও পাড়ায় পুলিশ এসেছিল। পাড়ার বাসিন্দা তথা নিহতের আত্মীয় শেখ হাবিব বলেন, ‘‘শনিবার রাত থেকে গন্ডগোল হওয়ায় রবিবার পাড়ায় সব বাড়িতে ঠিক মতো রান্নাবান্নাও হয়নি। তাই রাতে ক্লাবের পাশে একটি বাড়িতে রান্নার ব্যবস্থা করে এক জায়গায় পাড়ায় ছেলেদের খাওয়ানো হচ্ছিল। সে সময় হঠাৎই এক দল সশস্ত্র যুবক আক্রমণ চালায়। রড-লাঠি-কুডুল দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। কালো পড়ে গেলে তার মাথায়ও কুড়ুলের কোপ পড়ে।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাম আমল থেকেই পিরবাহারামে একটি ক্লাবের সম্পাদক ছিলেন আকবর। তবে গত দে়ড় বছর ধরে ওই ক্লাবের দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে বলে অভিযোগ। তার জেরেই এই ঘটনা বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে এই হামলায় নিহতের স্ত্রী পাকিজা বিবির সরাসরি বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্বামী বরাবরই তৃণমূল করত। ২৫ বছর ক্লাবের সম্পাদক ছিল। তার উপর হামলাকারীপা বিজেপি করে।’’ আকবরের ভাই মহম্মদ হাবিব বলেন, ‘‘গত বারও এই পাড়ায় ব্যাপক ঝামেলা হয়েছিল। দাদার বাড়িতেও আক্রমণ করা হয়েছিল।’’

এই ঘটনায় বিজেপি-র দিকে অভিযোগ উঠলেও দলের বর্ধমান জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর দাবি, ‘‘ঘটনার সঙ্গে বিজেপি-র সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এটি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই জেরে ঘটেছে।’’ তবে তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘দলের কাজে মেদিনীপুরে রয়েছি। পাড়ায় ঝামেলার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নেই। এর কারণ নিয়ে খোঁজখবর নিতে হবে।’’

রবিবার রাতে ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী পিরবাহারামে পৌঁছয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায়, ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) সৌভিক পাত্র, বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহাও ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন