চায়ের দোকানে পিটিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে

বুধবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বনপাশ স্টেশন লাগোয়া এলাকায়। নিহত উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৬) ছিলেন তৃণমূলের বিল্বগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতি। খুনের খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে উজ্জ্বল-অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০৩:৫৭
Share:

কান্না: উজ্জ্বলের মৃত্যুতে শোকার্ত মা ও প্রতিবেশী।

বছর পাঁচেক আগে প্রথম বারের হামলার চোট পেয়েছিলেন দু’পায়েই। দ্বিতীয় হামলার সময় তাই সঙ্গীদের মতো ছুটে পালাতে পারেননি। চায়ের দোকান থেকে রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হল সেই তৃণমূল নেতাকে।

Advertisement

বুধবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বনপাশ স্টেশন লাগোয়া এলাকায়। নিহত উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৬) ছিলেন তৃণমূলের বিল্বগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতি। খুনের খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে উজ্জ্বল-অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাত-আট জনকে আটক করেছি। কেন এই খুন জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ দায়ের হয়। নিহত নেতার পরিবার এবং অনুগামীরা এই খুনের জন্য আঙুল তুলেছেন এলাকারই আর এক তৃণমূল নেতা জয়দেব মণ্ডল-সহ জনা বারো-চোদ্দোর বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনও বেঁচে।

জয়দেববাবুকে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি ‘মেসেজ’-এর। তবে দলের তরফে আউশগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের লোক নয়, হামলা চালিয়েছে সিপিএমের লোক। পুলিশকে বলেছি গ্রেফতার করতে।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, বিল্বগ্রাম পঞ্চায়েতের রাশ নিয়ে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বেশ কয়েক মাস ধরেই সংঘাত চলে আসছে। এ বার ওই পঞ্চায়েতের ১৮টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনে বিনা লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। অনুব্রতর বক্তব্য শুনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘ওখানে তো উন্নয়নের মশারি টাঙানো ছিল! মশাও গলতে পারেনি। সিপিএম কোথা থেকে আসবে? অন্তর্দ্বন্দ্ব আড়াল করার জন্য বস্তাপচা গল্প।’’

পরিবার জানিয়েছে, ২০১৩তে একটি রাজনৈতিক হামলার পরে কলকাতায় নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করে উজ্জ্বলের দু’পায়েই স্টিলের পাত বসানো হয়। সে জন্য ছোটাছুটি করা সম্ভব ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, হামলাকারীরা তাঁকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে রড দিয়ে পেটানোর পর ধারাল অস্ত্র দিয়েও কুপিয়ে পালায়। বর্ধমান মেডিক্যাল হয়ে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার পথে উজ্জ্বল মারা যান। উজ্জ্বলের বোন নিরুপমা দত্তের আক্ষেপ, ‘‘প্রথম হামলার পরে দাদাকে বাঁচাতে পেরেছিলাম। এ বার সুযোগই পেলাম না!’’

ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন