হুমকি হেলমেটহীন নেতার

পেট্রোল না দিলে ভেঙে দেব পাম্প

হেলমেট ছাড়া চালানো যাবে না মোটরবাইক, এই নির্দেশ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। পুলিশও পাম্পগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, হেলমেট ছাড়া পেট্রোল বিক্রি করা যাবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০৪:৩০
Share:

সৌরভ বসু — নিজস্ব চিত্র।

হেলমেট ছাড়া চালানো যাবে না মোটরবাইক, এই নির্দেশ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। পুলিশও পাম্পগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, হেলমেট ছাড়া পেট্রোল বিক্রি করা যাবে না। এ বার সেই নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই এক যুব নেতার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পাম্পকর্মীরা পেট্রোল দিতে না চাওয়ায় মেদিনীপুরের ওই যুব নেতা পাম্প ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। ভয় পেয়ে শেষ পর্যন্ত পেট্রোল দিয়েও দেন পাম্পকর্মীরা।

Advertisement

গত রবিবার রাতের ওই ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি। পাম্প মালিক বিশ্বনাথ তুলসীয়ান বলেন, “গোলমালের সময় পাম্পে ছিলাম না। পরে শুনেছি, হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দেওয়া যাবে না জানানোয় এক পাম্পকর্মীর সঙ্গে উনি তর্কাতর্কি করেন।” পুলিশে জানাননি কেন? বিশ্বনাথবাবুর জবাব, “দেখছি কী করা যায়!”

অভিযুক্ত সৌরভ বসু যুব তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক। ঘটনার রাতে বটতলাচকের পাম্পে পেট্রোল নিতে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, সৌরভের মাথায় হেলমেট ছিল না। পাম্পকর্মী জানান, পুলিশের নির্দেশ, হেলমেট ছাড়া পেট্রোল মিলবে না। পাম্পে সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও ছিল। অভিযোগ, তাও ওই কর্মীকে হুমকি দিতে থাকেন সৌরভ। ঘটনাটি মোবাইল-বন্দি করেন প্রত্যক্ষদর্শী। মঙ্গলবার সেই ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই সব জানাজানি হয়।

Advertisement

ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পাম্পকর্মীকে গলা চড়িয়ে সৌরভ বলছেন, ‘৫০টা ছেলে এখানে এসে ভেঙে দিলে কে বাঁচাবে? মালিক বাঁচাবে তো? মালিককে বলে দেবেন সৌরভ বসু এসে বলে দিয়ে গিয়েছে।’ পাম্পকর্মী আইনের কথা শোনানোর পরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা আইন তৈরি করি। তুমি আমাকে কী আইন দেখাবে! ধরলে আমাকে ধরবে। তোমার কী সমস্যা?’

ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতে অবশ্য সুর পাল্টেছেন সৌরভ। তাঁর দাবি, “আমি কথাটা ও ভাবে বলতে চাইনি। পাম্পের ওই কর্মীই খারাপ ব্যবহার করেন।’’ তাঁর
দাবি, ‘‘রাতে তখন বৃষ্টি পড়ছিল। সমস্যার কথা পাম্পকর্মীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। উনি বুঝতেই চাইছিলেন না!” একইসঙ্গে এও বলেন, ‘‘হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানো উচিত নয়। পুলিশ এখন পাম্পে পাম্পে নজরদারি চালাচ্ছে। এটা তো ভাল উদ্যোগ!”

দলের যুব নেতার আচরণে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “ঘটনাটি ঠিক কী জানি না! খোঁজ নিচ্ছি!” দলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি আশিস চক্রবর্তীরও বক্তব্য, “দেখছি কী হয়েছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন