নিহত তৃণমূল নেতা মুক্তার শেখ। ছবি: মোহন দাস
জয়নগর, আদ্রার পরে এ বার আরামবাগ। চার দিনের মধ্যে রাজ্যে ফের খুন হলেন আরও এক তৃণমূল নেতা।
রবিবার রাতে হুগলির আরামবাগের তৃণমূল নেতা মুক্তার শেখের (৪৩) মৃতদেহ মিলল তাঁর বাড়ি হরিণখোলা অঞ্চলের মজফ্ফরপুর গ্রাম সংলগ্ন মধুরপুরের টেলিফোন টাওয়ারের কাছ থেকে। তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। মুক্তার আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কৃষি-সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক সময়ে ঘরছাড়াও ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর তাঁকে ঘরে ফেরায় প্রশাসন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মতে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন। একই অভিযোগ তুলেছেন মুক্তারের স্ত্রী সাইনারা বেগমও। যদিও এ দিন রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিনি থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি।
সাইনারা বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান লাল্টু খানের লোকজন স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ওরাই খুন করেছে।’’ লাল্টু অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি ওই সময়ে বলাগড়ে ছিলাম। আমার লোকজন ওঁকে খুন করবে কেন?’’ এসডিপিও (আরামবাগ) কৃশানু রায় জানান, প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইন ও আইন অমান্য, রথযাত্রা নিয়ে জোড়া কৌশল নিচ্ছে বিজেপি
হরিণখোলা অঞ্চলটি আরামবাগ থানার অধীনে হলেও পুরশুড়া বিধানসভা এলাকায়। মুক্তার ছিলেন পুরশুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ রহমানের অনুগামী। এলাকার ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করেই পুরশুড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক গোষ্ঠীর নেতা পারভেজ, অন্য গোষ্ঠীর নেতা বর্তমান বিধায়ক মহম্মদ নুরুজ্জামান। দুই গোষ্ঠী চলতি বছরে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এ বার খুন হলেন মুক্তার। এ ব্যাপারে পারভেজ বলেন, “কিছু বলার নেই। পুলিশ তদন্ত করুক।” বিধায়ক বলেন, “সব পক্ষকে একাধিকবার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। কী করে হল জানি না।”