মেদিনীপুরে যুবশক্তির কর্মসূচিতে সোহম। নিজস্ব চিত্র
মঞ্চের নাম ‘বাংলার যুবশক্তি’। খাতায় কলমে তা অরাজনৈতিক। মেদিনীপুরে সেই মঞ্চের প্রস্তুতি বৈঠকে এসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। ঝাড়গ্রামের প্রস্তুতি আবার বৈঠকে প্রশ্ন উঠল —‘অরাজনৈতিক মঞ্চে কেন এত তৃণমূলের চেনা মুখের আনাগোনা!’
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের বৈঠকে অজিতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বিশ্বাস করুন, ওর (অভিষেক) পার্লামেন্টের একটা বক্তৃতা রেকর্ড করে আমি অন্তত সাতদিন শুনেছি। গত দশ বছরের মধ্যে এমন পরিণত বৃক্ততা কোনও বিরোধী নেতার মুখ থেকে শুনেছি বলে আমার অন্তত মনে পড়ছে না!’’ অজিতের এ হেন প্রশংসা নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, সাধারণত, তৃণমূলের বৈঠকে অভিষেকের প্রশংসা করতে শোনা যায় রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়াকে। আর অজিত এড়িয়ে যান অভিষেকের প্রসঙ্গ। সে ক্ষেত্রে দলের কোনও বৈঠকে এই প্রথম এত খোলাখুলি অভিষেকের প্রশংসা করলেন অজিত।
এ দিনের বৈঠকে অজিতের পাশাপাশি ছিলেন তৃণমূলের তারকা- যুবনেতা সোহম চক্রবর্তী, সাংসদ মানসও। সেখানে বারবার অভিষেকের প্রশংসা এবং তাঁর সমালোচকদের কটাক্ষ করেছে অজিত। বলেছেন, ‘‘এটা (যুবশক্তি) নতুন ধারণা। নতুন স্রোত ঢুকিয়ে দেওয়া। এর জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাথা নীচু করে শ্রদ্ধা জানানো ছাড়া আগামী প্রজন্মের আর কোনও পথ থাকবে না। যারা প্রচার করত, ও দুধেভাতে এসে, রসেবশে এসে এ ভাবেই দলটাকে করতে চাচ্ছে, বিশ্বাস করুন, তাদের প্রতি ঘৃণায় আমার মনটা মিশে গিয়েছে।’’
ঝাড়গ্রামের প্রস্তুতি বৈঠক ছিল একটি বেসরকারি অতিথিশালায়। ‘যুবশক্তির’ ফিল্ড মেম্বারদের উদ্দেশে যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য নির্মাল্য চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা যাঁদের যোগদান করিয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশ তৃণমূল। এটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। শাসক দলের বাইরে অথবা অরাজনৈতিক যুবদের এই মঞ্চে আনতে হবে।’’ তৃণমূল স্তরে মানুষের কাছে পৌঁছেই যে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে তা আরও একবার জানিয়ে দেন নির্মাল্য ও সোহম। পর্যালোচনায় উঠে আসে, অন্য ব্লকের তুলনায় সদস্য সংগ্রহে পিছিয়ে রয়েছে নয়াগ্রাম ও লালগড়। সদস্য সংগ্রহ অভিযানে বাকি রয়েছে আটদিন। অথচ এখনও লালগড়ের দু’একজন ফিল্ড মেম্বার একজনও সদস্য করতে পারেননি।
সদস্য সংগ্রহ হচ্ছে। কিন্তু কোথাও কি ফাঁক থেকে যাচ্ছে! শুরু থেকেই তাই সাবধানী ‘যুবশক্তি’র নেতৃত্ব। এরই মধ্যে অরাজনৈতিক মঞ্চে উঁকি দিচ্ছে অন্দরের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের সম্ভাবনা।