প্রতীকী ছবি।
দলের জাতীয় কর্মসমিতি আরও কিছুটা সম্প্রসারণ করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। ফেব্রুয়ারিতে সভাপতি বা চেয়ারপার্সন নির্বাচনের পরে এই বিষয়ে উদ্যোগ শুরুর কথা ভাবা হয়েছে। সেই সঙ্গে, চেয়ারপার্সনের হাতে যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা খারিজের বিশেষ ক্ষমতা দেওয়ার জন্য গৃহীত প্রস্তাব কার্যকর করা নিয়েও প্রাথমিক স্তরে আলোচনা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত দু’টি আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করতে গেলে, সাংগঠনিক নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়ে দলের সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
তৃণমূলের সাংগঠনিক কাঠামোয় দলের নীতি ও সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে জাতীয় কর্মসমিতিই সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। এই কমিটির এখন সদস্য সংখ্যা ২০। তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতিতে এখন চেয়ারপার্সন ছাড়া ১৯ সদস্যের মধ্যে ১০ জনকে মনোনয়ন করেন চেয়ারপার্সন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘এই নির্বাচন শুধু সভাপতি (চেয়ারপার্সন) নিয়োগ সংক্রান্ত। জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য বৃদ্ধির প্রস্তাব ইতিমধ্যেই গৃহীত। সেই সঙ্গে চেয়ারপার্সনের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাবও রয়েছে। তবে তার জন্য সংবিধানের অনুমোদন জরুরি। তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।’’
তৃণমূলের সাংগঠনিক কাঠামো এবং পরিচালন পদ্ধতিতে দলের চেয়ারপার্সনই সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। দলের বিভিন্ন স্তরে নিয়োগ, অপসারণ বা নীতি নির্ধারণেও তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এই ব্যবস্থাকে আরও নির্দিষ্ট করতে চেয়ারপার্সনের হাতে একক ভাবে ক্ষমতা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। তবে কোনও কোনও মহলে কার্যকরী সভাপতি বা সমতুল পদ তৈরি নিয়ে চর্চা হলেও, তা এই মুহূর্তে দলের বিবেচনায় নেই বলেও জানা গিয়েছে।
রাজ্যে এখন একচ্ছত্র রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে তৃণমূলের। সেই সঙ্গে রাজ্যের এই প্রভাবের সূত্র ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় জাতীয় স্তরেও তৃণমূলের ভূমিকা এবং কাজকর্ম রাজনৈতিক মহলের আলোচনায় রয়েছে। এই অবস্থায় তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের দিকেও নজর রয়েছে সংশ্লিষ্ট সকলের। সেই সঙ্গে, এ বারের নির্বাচনের পরে দলীয় কাঠামোয় কোনও বদল হয় কি না, তা-ও চর্চায় রয়েছে। সে দিক থেকে জাতীয় কর্মসমিতিতে সদস্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ, মঙ্গলবার দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচনের জন্য দলের ভোটার-তালিকা চূড়ান্ত করছে তৃণমূল। সাধারণ ভাবে এই তালিকায় থাকছেন সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদীয় সভাধিপতি, সহকারী সভাধিপতি এবং পুর ও অন্যান্য জায়গায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে বাছাই করা অংশ। দলীয় সূত্রে খবর, করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে কম-বেশি দেড় হাজার ভোটার ও পর্যবেক্ষক সাংগঠনিক নির্বাচনে সারা রাজ্য থেকে উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় সূত্রে খবর, শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল না হলে সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও এই তালিকায় দলের দুই সাংসদ শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর জায়গা হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে। বিধায়কদের ভোটাধিকার দেওয়া হলেও, বিজেপির প্রতীকে জয়ী যে বিধায়কেরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের এই তালিকায় থাকার সম্ভাবনা কম। কারণ, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে আনা অভিযোগ জোরদার হতে পারে।