জেলে বসে ফোন করে তোলাবাজি করছেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ফাইল ছবি।
জেল বসে ফোন করে তোলাবাজি করছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, এমনটাই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। সেই ভাইরাল কল রেকর্ডে একজন পুরুষ ও একজন মহিলার কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে। পুরুষকণ্ঠটি নিজেকে জেলবন্দি তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ বলে দাবি করছেন। যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। সেই অডিয়ো কলকে ভিত্তি করেই বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন যে, জেলে বসেই ফোন করে তোলাবাজি করছেন জীবনকৃষ্ণ। বর্তমানে আলিপুরের প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি জীবনকৃষ্ণ।
শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, যিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, জেলে বসে বাইরে ফোনে কথা বলছেন, টাকা তুলছেন। গত কয়েক দিন থেকেই তিনি এই কাজ করে যাচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “জেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে। সেখানে বসেই আবার শিক্ষক নিয়োগের জন্য টাকা তুলছেন তিনি।” তবে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ প্রসঙ্গে আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই ধরনের কোনও অভিযোগ তাঁদের কানে আসেনি। তাই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনার পর জেলে তল্লাশি চালিয়ে যা কিছু পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হচ্ছে। এই পর্যায়ে জীবনকৃষ্ণের সেলেও তল্লাশি চালিয়েছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে কোনও মোবাইল ফোন তাঁর সেল থেকে পাওয়া যায়নি বলেই দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফোন নিয়ে বিতর্ক জীবনকৃষ্ণের ক্ষেত্রে কোনও নতুন বিষয় নয়। এর আগে তাঁকে গ্রেফতারির সময়ও মোবাইল ফোন নিয়ে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তার আগে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। অভিযোগ, তল্লাশির সময় প্রমাণ লোপাটের জন্য জীবনকৃষ্ণ নিজের দু’টি মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। দীর্ঘ তল্লাশির পর পুকুরের জল ছেঁচে তা উদ্ধার করা হয়। ১৩ মাস পর তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। জেল থেকে বেরিয়ে বিধানসভাতেও গিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। আবার চলতি বছর ২৫ অগস্ট সকাল থেকে কলকাতা এবং জেলার একাধিক জায়গায় ইডি তল্লাশি অভিযান শুরু করে। সেই পর্যায়েই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইডির একটি দল সকাল সকাল পৌঁছে যায় জীবনকৃষ্ণের আন্দির গ্রামের বাড়িতে। বিধায়ক সেই সময় বাড়িতেই ছিলেন। ইডিকে দেখে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। কেন্দ্রীয় সংস্থার তিন জওয়ান তাঁকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। অভিযোগ, পালানোর সময় বাড়ির পিছনের ঝোপে একটি মোবাইল ফেলে দেন তিনি। আর এ বার তাঁর বিরুদ্ধে জেল থেকে ফোন করার অভিযোগ উঠল।