প্রতীকী ছবি।
সব পদের জন্য একাধিক দাবিদার। তাই পদ নিয়ে বিদ্রোহের আশঙ্কায় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যদের ‘মুচলেকা’ চায় তৃণমূল।
পদাধিকারী নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন, এই মর্মে লিখিত দিতে হচ্ছে নির্বাচিত সদস্যেদের। উত্তর ২৪ পরগনায় এ ভাবেই বোর্ড গঠনের দলীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে ৪৫টি পঞ্চায়েতের দলনেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। পরের ধাপে পঞ্চায়েত সমিতির প্রস্তুতি হবে। পাশাপাশি দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আরও বেশি দায়বদ্ধ রাখতে দলীয় প্রতীকে জেতা সদস্যদের দলীয় সদস্যপদ দেওয়ার পরেই বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে তৃণমূল।
পঞ্চায়েতের তিন স্তরে মনোনয়নপর্ব থেকেই দাবিদারের চাপ রয়েছে তৃণমূলে। সেই কারণে অশান্তিও হয়েছে একাধিক জেলায়। বোর্ড গঠনে সেই অশান্তি এড়াতে পদাধিকারী নির্বাচনের রাশ হাতে রাখতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রাথমিক ভাবে যে সব জায়গায় অশান্তির আশঙ্কা বেশি সেখানে তিন স্তরে পরিষদীয় দলের নেতা বাছাই করবে উর্ধ্বতন কমিটি। এই দলনেতাদের মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট নেতৃত্ব মুখবন্ধ খামে পদাধিকারীর নাম পাঠিয়ে দেবেন। সেই নামই নির্দিষ্ট পদের জন্য একমাত্র বিবেচ্য। কেউ তাতে আপত্তি করলে দল তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবেই দেখবে। জ্যোতিপ্রিয়ের কথায়, ‘‘এটা মুচলেকা কেন হবে? দল কখনও কোনও হুইপ দিলে তা তাঁদের মানতে হবে। সেই সম্মতি দিয়েছেন।’’
এই প্রক্রিয়ায় জেলা ও স্থানীয় স্তরের নেতাদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দও নজরে রাখতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। কারণ মনোনয়নপর্বে বহু জায়গায় তাঁরা এমন অনেককেই প্রার্থী করেছিলেন, দল যাঁদের চায়নি। এবং কোথাও কোথাও নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনী প্রতীকও বিলি করা হয়েছিল। পদাধিকারী বাছাইয়ে এই নিয়ম বেঁধে দিয়ে এই বিষয়টিও বন্ধ করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘দল কোথাও কিছু চাপিয়ে দেবে না। সদস্যেরাই পদাধিকারী নির্বাচন করবেন। কোথাও প্রয়োজন হলে দল হস্তক্ষেপ করবে।’’
এ বার মনোনয়নপর্বে দাবির চাপে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা সমস্যায় ফেলেছিল দলীয় নেতৃত্বকে। বেশির ভাগ জেলায় মনোনয়ন নিয়ে দলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূলের একটা বড় অংশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল নির্দল হিসেবে। তাতে দলের প্রার্থী পরাজিত হন বহু জায়গায়। সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই বোর্ড গঠনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে চাইছে তৃণমূল।