বন্‌ধে রাস্তায় থাকবে তৃণমূল, পাল্টা বিজেপিও

বন্‌ধ মোকাবিলায় দলীয় স্তরে করণীয় ঠিক করার জন্য রবিবার তৃণমূল ভবনে বিভিন্ন জেলার পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকের পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীদের প্রতিটি ব্লক এবং ওয়ার্ডে বন্‌ধের বিরুদ্ধে এবং শান্তির পক্ষে সভা এবং মিছিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

—প্রতীকী ছবি

প্রশাসনিক ভাবে রাজ্যকে সচল রাখার ব্যবস্থা তো হবেই। তার পাশাপাশি তৃণমূলও আগামী বুধবার বিজেপির ডাকা বন্‌ধের বিরোধিতায় রাস্তায় নামবে। বিজেপি পাল্টা জানিয়েছে, বন্‌ধের সমর্থনে তাদের কর্মীরা রাস্তায় থাকবে। প্রশাসন বলপ্রয়োগ করলে তাঁরাও ছেড়ে কথা বলবেন না। ইসলামপুরে ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে ডাকা বন্‌ধকে ঘিরে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের অবস্থানের জেরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

Advertisement

বন্‌ধ মোকাবিলায় দলীয় স্তরে করণীয় ঠিক করার জন্য রবিবার তৃণমূল ভবনে বিভিন্ন জেলার পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকের পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীদের প্রতিটি ব্লক এবং ওয়ার্ডে বন্‌ধের বিরুদ্ধে এবং শান্তির পক্ষে সভা এবং মিছিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ আজ, সোমবার থেকেই বন্‌ধ-বিরোধী প্রচার শুরু হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার জন্য আজই নবান্নে বৈঠকে বসবে মন্ত্রিগোষ্ঠী। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্যকে অশান্ত করার জন্য বিজেপি নানা পরিকল্পনা করছে। বাংলার মানুষ বন্‌ধ সফল হতে দেবেন না। বাস-ট্রেন স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। প্রতিটি বন্‌ধে সরকারি কর্মীদের উপর যে নির্দেশ থাকে, এ বারেও তার পরিবর্তন হবে না।’’

গুলিতে দুই ছাত্রের নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি এবং আরএসএসের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। পার্থবাবুও এ দিন অভিযোগ করেন, বিজেপি-আরএসএস বহিরাগতদের নিয়ে এসেছিল। যদিও দুই ছাত্রের নিহত হওয়াকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘সব কিছুরই তদন্ত হচ্ছে। স্কুল কমিটির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের ভূমিকারও তদন্ত হচ্ছে। দোষীদের শাস্তি হবেই।’’

Advertisement

রাজ্য বিজেপিও সদর দফতরে বৈঠকে করে বন্‌ধ সফল জন্য নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমরা বন্‌ধের রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু রাজ্যে যা পরিস্থিতি, তাতে বন্‌ধ না ডেকে উপায় ছিল না। রাজ্যের মানুষই বন্‌ধ সফল করবেন।’’ তাঁর অভিযোগ, তদন্তের নামে ‘প্রহসন’ হচ্ছে। সঙ্ঘ-বিজেপির জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ‘‘এবিভিপি-র কর্মীরা ওখানে ছিলেন। ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতেই তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন। এটা কোনও অন্যায় নয়।’’ বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল এ দিন ইসলামপুরে গিয়ে সিবিআই তদন্তেরই দাবি করেছে।

গুলি চলার পরে প্রথম ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তার পরে বাম বিধায়কদের প্রতিনিধিদল গিয়েছে, এসএফআই ময়দানে নেমেছে। কলকাতায় এ দিনও শ্যামবাজার থেকে কলেজ স্ট্রিট এবং গড়়িয়াহাট থেকে হাজরা পর্যন্ত দু’টি মিছিল করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘বারবার আরএসএসের নাম করে মুখ্যমন্ত্রীই ওদের হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন! তৃণমূল বিজেপি-সঙ্ঘকে দায়ী করল আর বিজেপি বন্‌ধ ডাকল। গড়াপেটা ফের পরিষ্কার!’’

সিপিএম ও কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা বন্‌ধ সমর্থন করছে না। প্রতিনিধিদল নিয়ে এ দিন রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইসলামপুরের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় বা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। পরে তিনি বলেন, ‘‘হাজার হাজার মাইল দূরে বসে মুখ্যমন্ত্রী বুঝে গেলেন, পুলিশ কিছু করেনি! আরএসএস করেছে। তা হলে সিবিআই বা বিচারবিভাগীয় তদন্তে ভয় কীসের?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন