বালাই বাবা, ‘বেটা’কে ব্যাট দিচ্ছে তৃণমূল

বিজেপি-র মুকুল রায়ের মোকাবিলায় তৃণমূলের তূণে সব চেয়ে বড় তির আপাতত শুভ্রাংশু রায়। মুকুল-পুত্রকে দিয়েই অদূর ভবিষ্যতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে বিজেপি-বিরোধী বক্তৃতা করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২১
Share:

শুভ্রাংশু রায়

বাবা গিয়েছেন তো কী! ছেলে তো আছে!

Advertisement

বিজেপি-র মুকুল রায়ের মোকাবিলায় তৃণমূলের তূণে সব চেয়ে বড় তির আপাতত শুভ্রাংশু রায়। মুকুল-পুত্রকে দিয়েই অদূর ভবিষ্যতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে বিজেপি-বিরোধী বক্তৃতা করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। বীজপুরের বিধায়ককে সেই বার্তা দলের তরফে পৌঁছেও দেওয়া হয়েছে। নিজের জেলায় ওই দায়িত্ব পালনের আগে আজ, সোমবার খাস ধর্মতলাতেও যুব তৃণমূলের বিজেপি-বিরোধিতার সভায় বক্তা হিসাবে দেখা যেতে পারে শুভ্রাংশুকে। তিনি কেমন ভাবে ওই দায়িত্ব পালন করছেন, তা যাচাই করে নিয়ে অন্যান্য জেলাতেও প্রয়োজনে তাঁকে ব্যবহার করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে শুভ্রাংশু বলেছেন, ‘‘মুকুল রায় আমার বাবা হতে পারেন। কিন্তু রাজনীতিতে আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ছাড়া কাউকে চিনি না।’’ রায় পরিবারের খাস তালুক কাঁচরাপাড়ায় সভা করে এই বক্তব্য এক প্রস্ত স্পষ্টও করে দিয়েছেন শুভ্রাংশু। এ বার অন্যত্রও গিয়ে বিজেপি-বিরোধিতার মোড়কে আদতে মুকুলের তোপের জবাব তাঁকে দিয়ে দেওয়াতে চাইছে তৃণমূল। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘মুকুল রায় যদি বড় নেতা হন, তা হলে আগে নিজের ছেলেকে ভাঙিয়ে নিয়ে দেখান! উনি দাবি করছেন, প্রতি বুথে নাকি ওঁর লোক আছে। অথচ তাঁর বাড়ির লোকই আমাদের দলনেত্রীর হয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে বলছেন। আরও বলবেন।’’

Advertisement

নোট বাতিল, জিএসটি এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিবাদে আজ দুপুরে ধর্মতলায় সভা করছে যুব তৃণমূল। যেখানে বক্তা হিসাবে থাকার কথা শুভ্রাংশু। তৃণমূলের রাজ্য নেতাদের মধ্যে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত। সভার উদ্যোক্তা উত্তর কলকাতা যুব তৃণমূল। মুকুল, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহদের নিয়ে বিজেপি রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিজেপি যে সমাবেশ করেছিল, তার পাল্টা সভা করতে তৃণমূলের একটি জেলার যুব সংগঠনই যথেষ্ট— এই বার্তা দেওয়া শাসক দলের কৌশল। যদিও উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা এবং সংলগ্ন দু-একটি জেলা থেকেও সমাবেশে লোক আনতে বলা হয়েছে। এই সভাকে মুকুলের পাল্টা সভা বলতেও আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল নেতৃত্ব রাজি নন।

উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলে পুরনো সমীকরণ যা-ই থাকুক, এখন রাজনীতির পাশা উল্টে যেতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো নেতাও প্রকাশ্যে মুকুলকে কটাক্ষ করছেন। আবার তৃণমূলে মুকুলের বিপরীত শিবিরে থাকার কারণে ভাটপাড়া-জগদ্দলের ডাকসাইটে নেতা হয়েও অস্বস্তিতে থাকতে হতো বিধায়ক অর্জুন সিংহকে। মুকুল-বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সে অস্বস্তি কেটেছে। মমতাও তাঁকে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে সংগঠন প্রসারের কাজ দিয়েছেন। যে কাজ আগে ছিল মুকুলের হাতে।

পুরনো পরিবারের লোকজনকে এখন ‘রণং দেহি’ চেহারায় দেখে মুকুল অবশ্য বিচলিত নন। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার যুক্তি, রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বলে তো কিছু হয় না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন