ম্যাথুর মুখোশে কার ষড়যন্ত্র, প্রশ্ন তৃণমূলের

ম্যাথু স্যামুয়েলের পিছনে কে! এই প্রশ্ন তুলেই সিবিআই তদন্ত আটকানোর সব রকম চেষ্টা করল তৃণমূল নেতৃত্ব। দিনের শেষে লাভ হয়নি। উল্টে তৃণমূলের অন্দরমহলেই যে অবিশ্বাসের আবহ তৈরি হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

ম্যাথু স্যামুয়েলের পিছনে কে! এই প্রশ্ন তুলেই সিবিআই তদন্ত আটকানোর সব রকম চেষ্টা করল তৃণমূল নেতৃত্ব। দিনের শেষে লাভ হয়নি। উল্টে তৃণমূলের অন্দরমহলেই যে অবিশ্বাসের আবহ তৈরি হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নারদ নিউজের সিইও ম্যাথু স্যামুয়েল সিবিআই ও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য কে ডি সিংহের নির্দেশেই তহলকা-র হয়ে কলকাতায় এসে ‘স্টিং–অপারেশন’ চালিয়েছিলেন তিনি। কে ডি তাঁকে এ জন্য ৮০ লক্ষ টাকাও দেন। আজ সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূলের সাংসদ-মন্ত্রীদের আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। তৃণমূল নেতাদের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রশ্ন তোলেন, ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে যে ‘স্টিং অপারেশন’ হল, সেই ভিডিও ২০১৬-র বিধানসভা ভোটপর্বের মাঝখানে প্রকাশ হল কেন? কেন ম্যাথু দু’বছর অপেক্ষা করলেন?

সিব্বলের যুক্তি শুনে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর মন্তব্য করেন, হতে পারে, তহলকা কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এই ভিডিও প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছিল। এমনও হতে পারে, অ্যালকেমিস্ট সংস্থা তহলকার মালিক ছিল। সেই সংস্থার মালিক তৃণমূল সাংসদ বলেও সমস্যা হয়েছে। ম্যাথু নিজেও এর আগে যুক্তি দিয়েছিলেন, কে ডি-ই তাঁকে ওই ভিডিও সম্প্রচার করতে মানা করেন।

Advertisement

আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে ম্যাথু বলেন, তাঁর ‘স্টিং অপারেশন’-এর পিছনে হাওয়ালা আইএসআই, আন্তর্জাতিক অর্থের কোনও ষড়যন্ত্র নেই। রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করারও কোনও চেষ্টা ছিল না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যা করেছি, খাঁটি সাংবাদিক হিসেবেই করেছি। কোথা থেকে টাকা এসেছিল, তা-ও বলেছি।’’ কে ডি সিংহ অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ম্যাথু তহলকা ছেড়ে চলে যান। কিন্তু খেহর সিব্বলকে দেখান, কলকাতা হাইকোর্টে ম্যাথু বলেছেন, অ্যালকেমিস্ট সংস্থা থেকেই তিনি টাকা নেন।

সিব্বলরা যুক্তি দেন, রাজ্যের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া মানে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া। তাতে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট হবে। সিব্বল বলেন, ‘‘বাস্তব কী, তা আপনারা জানেন। প্রয়োজনে কোর্ট তদন্তে নজরদারি করুক। দিল্লির হাতে কেন নিয়ন্ত্রণ থাকবে!’’ প্রধান বিচারপতি খেহর কটাক্ষ করেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি আপনাদের ভয়ের কারণ। সরকারে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে যে এই আতঙ্ক হচ্ছে, তা-ও অনুভব করতে পারছি।’’ সিব্বল যুক্তি দেন, হাইকোর্ট যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের মধ্যে অমিতাভ চক্রবর্তী কংগ্রেসের হয়ে বিধানসভা ভোটে লড়েছেন। অন্য জন ব্রজেশ ঝা বিজেপি-র নেতা। তাঁরা এফআইআর দায়ের না করেই সরাসরি হাইকোর্টে মামলা করেন। প্রধান বিচারপতি অবশ্য সেই যুক্তি মানতে চাননি। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে হাইকোর্টে মামলার যথেষ্ট কারণ ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন