SIR

২০০২-এর ভোটার তালিকায় রাজ্যের অনেকের নাম থাকলেও ওয়েবসাইটে নেই! ‘কারচুপি’ নিয়ে কমিশনে তৃণমূল

রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, রাজ্যের ভোটারদের ভয় দেখাতেই এসআইআর করছে কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। তাদের কথায় কাজ করছে কমিশন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৫২
Share:

এসআইআর নিয়ে কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্যে ভোটার তালিকার এসআইআর (বিশেষ নিবিড় সংশোধন) ‘অনুষ্ঠানিক ভাবে’ শুরু হওয়ার আগেই বহু ভোটারের নাম তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানাল তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল এমন অনেক ভোটারের কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সেই তালিকায় নাম নেই। এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী।

Advertisement

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার পানিহাটিতে ‘নিদান’ দিয়ে বিজেপির লোকজনের থেকে বাবা-ঠাকুর্দার শংসাপত্র চাইতে বলেন। বৃহস্পতিবার সেই সুরই শোনা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের গলায়। চন্দ্রিমা জানান, রাজ্যের ভোটারকে ভয় দেখাতেই এসআইআর করছে কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। তাদের কথায় কাজ করছে কমিশন। কুণাল কটাক্ষ করে জানান, এসআইআর আসলে ‘সাইলেন্ট ইনভিজ়িবল রিগিং’ অর্থাৎ ‘চুপিচুপি কারচুপি’। তাঁর কথায়, ‘‘একাধিক এলাকায় অভিযোগ উঠেছে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল, এমন অনেকের এখন কমিশন ২০০২ সালের ভোটার তালিকা বলে যেটা ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে, তাতে নাম নেই। তাঁরা বিষয়টি ধরে ফেলছেন।’’ এর ব্যাখ্যা দাবি করেছেন কুণাল। তিনি জানিয়েছেন, অভিষেক আগেই রিগিং হচ্ছে বলে আশঙ্কা করেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে।

এই কারচুপির ‘উদাহরণ’-ও তুলে ধরেছেন কুণাল। তিনি অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কোচবিহারের নাটাবাড়ির দু’ নম্বর বুথের (এখন সেটি ৩০৩ নম্বর বুথের অন্তর্গত) ৭১৭ জন ভোটারের নাম ছিল। ‘হার্ড কপি’তে এখনও তা রয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২০০২ সালের তালিকায় দেখা গিয়েছে, ওই বুথের ভোটার সংখ্যা ১৪০। কুণালের প্রশ্ন, বাকিরা কোথায় গেলেন। একই ভাবে মাথাভাঙার ৬০ নম্বর বুথের কথাও বলেছেন তিনি। সেখানে ২০০২ সালের তালিকায় ছিল ৮৪৬ জনের নাম। কমিশনের ওয়েসবসাইটে ২০০২ সালের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ৪১৬ জনের নাম রয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২০০২ সালের তালিকায় অশোকনগর বিধানসভার ৬১ নম্বর বুথের ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর ক্রমিক সংখ্যার ভোটারের নাম নেই। সেই নিয়ে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ।

Advertisement

চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা ভোট, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি এ রাজ্যে কিছু করতে পারেনি। তাই ২০২৬ সালের ভোটে ভয়ের আবহ তৈরি করে ভোটে জিততে চাইছে তারা।’’ রাজ্যের অর্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা জানান, বিজেপি আসলে বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই কারণে বিজেপির হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে তাদের তিন বিধায়ক— গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বেরিয়ে গিয়েছেন। কেন অসম, ত্রিপুরায় এসআইআর হচ্ছে না, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘এনআরসি, এসআইআর আতঙ্কে’ রাজ্যে পর পর কয়েক জনের আত্মহত্যার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে তাঁদের কথায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement