TMC Worker Murder

শান্তিপুরে তৃণমূলকর্মী খুনে ধৃত ১, রহস্য ক্যামেরায়

পরিস্থিতির তাত কয়েক ডিগ্রি বাড়িয়ে দিয়েছে ‘সিসি ক্যামেরা রহস্য!’

Advertisement

সম্রাট চন্দ

সম্রাট চন্দ শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪৬
Share:

নিহত শান্তনু মাহাতোর স্ত্রী ঝুম্পা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

খুন হয়েছেন পুরপ্রধান-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী এবং তাতে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে অভিযুক্ত এলাকার তৃণমূল বিধায়ক। এমন ‘হাই ভোল্টেজ’ ঘটনা নিয়ে এমনিতেই শান্তিপুর ফুটছে। এলাকায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। তার উপর পরিস্থিতির তাত কয়েক ডিগ্রি বাড়িয়ে দিয়েছে ‘সিসি ক্যামেরা রহস্য!’

Advertisement

মঙ্গলবার ব্রহ্মতলা বাজারে যে জুয়ার ঠেকে তৃণমূল কর্মী শান্তনু মাহাতো ওরফে গনা খুন হন তার কাছেই রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো ছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা তথ্য সংগ্রহের জন্য ওই ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখতে পান, তাতে কোনও ছবি ওঠেনি। অথচ, এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই ক্যামেরা আপনা থেকে ঠিক হয়ে যায়, এবং তাতে ছবি উঠতে থাকে!

শান্তিপুরে সব মিলিয়ে প্রায় শ’খানেক সিসি ক্যামেরা বিভিন্ন রাস্তায় রয়েছে। সেগুলি দেখাশোনার দায়িত্ব পুরসভারই। পুরপ্রধান অজয় দে-র বক্তব্য, ‘‘দু-তিন দিন আগে ওই ক্যামেরাটি খারাপ হয়েছিল বলে জানা যায়। সারানোর পরিকল্পনা ছিল। তার মধ্যেই শান্তনু খুন হন। অবাক হওয়ার বিষয়, খুনের ঘটনার কিছু ক্ষণ পরেই ক্যামেরা আপনা থেকে ঠিকঠাক চলতে শুরু করে। অত্যন্ত রহস্যজনক ব্যাপার। এর তদন্ত প্রয়োজন।’’ শান্তনু খুনে তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী ঝুম্পা মাহাতো। পুরপ্রধান অজয় দে আর বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিরোধ বহু দিনের এবং তা সর্বজনবিদিত। শান্তনু খুনে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ দায়ের হয়েছে ১১ জনের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে সন্তু চৌধুরী নামে এক জনকে বুধবার বিকেলে মালোপাড়ার কাছ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যদিও অরিন্দম বুধবার সারাদিন এলাকায় সঙ্গীদের নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। একাধিক অনুষ্ঠানে অংশও নিয়েছেন। এ ব্যাপারে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে যখন যাকে প্রয়োজন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ শান্তনু ওরফে গনার তৃণমূল কর্মী হওয়ার কথাই এ দিন অস্বীকার করেন অরিন্দম। বলেন, “নিহত যুবক সমাজবিরোধী ছিল। আমি কেন ওকে মারতে যাব? ওর সঙ্গে অনেকের ঝামেলা ছিল। আমার সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়নি। ওর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। পুরপ্রধানের সঙ্গেও নেই। ওর স্ত্রী কেন এ সব বলছেন জানি না। আমাদের দলে কোনও কোন্দল নেই।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘যারা তৃণমূলের ক্ষতি চায় তারা এ সব রটাচ্ছে।” কিন্তু অজয় দে এর পাল্টা বলেন, “নিহত যুবক আমাদের দলের সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। কাউকে মেরে ফেলার অধিকার আমাদের আইন দেয় না। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কারা দোষী।” ময়নাতদন্তের পর বুধবার বিকেলে শান্তনুর দেহ তাঁর বাড়িতে আনা হয়। সেখানে গিয়েছিলেন অজয় দে। পুরপ্রধান চলে যাওয়ার পরে বিধায়কের শাস্তির দাবি তুলে বড়বাজারের কাছে দেহ রেখে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন