লেখাপড়া শিকেয় তুলে নারদ নারদ

বারাসত কলেজে তৃণমূলেরই দুই ছাত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ঠেকাতে হাল ধরেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ সব যে বরদাস্ত করা হবে না, তা জানিয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে একসঙ্গে চলার নির্দেশও দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০১:৩৬
Share:

যুযুধান: রাস্তায় নেমে এসেছে বারাসত সান্ধ্য কলেজের দুই ছাত্রগোষ্ঠীর সংঘর্ষ। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

বারাসত কলেজে তৃণমূলেরই দুই ছাত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ঠেকাতে হাল ধরেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ সব যে বরদাস্ত করা হবে না, তা জানিয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে একসঙ্গে চলার নির্দেশও দিয়েছিলেন। তাতেও কাজ হল না। সোমবার দফায় দফায় দুই ছাত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বারাসত সান্ধ্য কলেজ। একই ভাবে শাসক দলের দুই গোষ্ঠী গণ্ডগোলে জড়িয়েছে বেড়াচাঁপার শহিদুল্লাহ কলেজেও।

Advertisement

বারাসতের ঘটনায় কলেজের সামনে হাতাহাতি শুরু হলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। মার খেলেন ছাত্রীরা। বেল্ট খুলে মারের অভিযোগও উঠেছে। আহত দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার ওই কলেজে এমন ঘটল। ফলে পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরাই।

বারাসত কলেজের রাশ কাদের হাতে থাকবে, পরিচালন সমিতিতে সরকার মনোনীত সদস্যের নাম নিয়ে কিছু দিন ধরেই গোলমাল চলছে। এ দিন প্রথমে কলেজের সামনে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিটে জখম হন বেশ কয়েক জন। পাঁচ জনকে হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। কিছু পরে হাসপাতাল থেকে আহতদের দেখে ফেরার সময়ে রবীন্দ্র ভবনের কাছে যশোর রোডের উপরে সামনাসামনি হয়ে যায় দু’পক্ষ। ফোন পেয়ে সেখানে আসেন আরও ছাত্র। শুরু হয় হুমকি, পাল্টা হুমকি ও হাতাহাতি। একটি বাইক ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন পথচারীরা। বারাসত থানার পুলিশ গিয়ে দু’জনকে আটক করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।

Advertisement

বারাসতের তৃণমূল ছাত্রনেতা চয়ন দাস বলেন, ‘‘প্রতি দিন বাইরের ছেলে কলেজে ঢুকিয়ে ওরা গোলমাল পাকাচ্ছে আর চক্রান্ত করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পারমিতা সেন বলেন, ‘‘কী ভাবে মারধর করা হয়েছে, গোটা ঘটনা দলকে জানানো হয়েছে। দলই শাস্তির ব্যবস্থা নেবে।’’

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরেও কোন সাহসে প্রতি দিন ওই কলেজে গোলমাল চলছে? তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘বহিরাগতরাই এ সব করছে।’’ তৃণমূলের অনেক নেতা-নেত্রীরও বক্তব্য, বারাসত থেকে শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের ভিতরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে, তারই প্রভাব পড়ছে কলেজে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করলেও তা থামছে না। কলেজের শূন্য পদে নিয়োগ থেকে শুরু করে কলেজ উন্নয়নের তহবিলের রাশ কার হাতে থাকবে, এ সব নিয়ে নেতাদের কলহের জেরেই এমন ঘটছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন