ফাইল চিত্র।
বসিরহাটের ঘটনা নিয়ে এক দিকে ব্যথিত, অন্য দিকে প্রবল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কার্যত নজিরবিহীন ভাবেই নবান্নে সাংবাদিকদের সামনে সেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। আক্রমণ করেছেন সংঘর্ষে লিপ্ত দুই পক্ষকেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়:
সোমবার যা ঘটেছে, তার সূত্রপাত সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দেওয়া কিছু মিথ্যে ছবি নিয়ে। যার সঙ্গে বাস্তবের সম্পর্ক নেই। তবু আমি বলব, যাঁরা এটা করছেন, ঠিক করছেন না। যে ছেলেটি করেছে, তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা উচিত ছিল।...
কিন্তু আমরা কী দেখলাম? আরেকটা দল গিয়ে সাম্প্রদায়িক ভাবে এটাকে উস্কে দিল। কাল দিন-রাত ঘুমোতে পারিনি। খুবই দুঃখের সঙ্গে বলছি, এত কাজ করার পরেও দুটো দলের মধ্যে এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অভিপ্রেত নয়। ওই ছেলেটিকে গ্রেফতার করার পরেও যে পক্ষ কাল সকাল থেকে রাস্তা আটকে লুঠ করেছে, তারা মোটেই রাজ্যের পক্ষে বলে আমি বিশ্বাস করি না।...
আরও পড়ুন: ভেবেছিলাম ছেড়েই দেব
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়াক তা আমি চাই না। দু’পক্ষের কাছেই আমার আবেদন, দাঙ্গা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। কেউ প্ররোচনা দিলে আপনারা তাতে পা দেবেন কেন? বিজেপি তো প্ররোচনা দেওয়ার জন্যই আছে। এই প্ররোচনায় যদি অন্যের ঘরে আগুন লাগে, কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। আমি যখন এই চেয়ারে বসেছি তখন আমার কাছে সবাই সমান। আমি কোনও গোষ্ঠী করি না। সব গোষ্ঠীই আমার কাছে সমান। আমি বিজেপির মতো একটা গোষ্ঠীর সঙ্গে থেকে আরেকটা গোষ্ঠীতে আগুন জ্বালাই না। হিন্দুর গায়ে লাগলেও আমার গায়ে জ্বালা ধরে, মুসলমানের লাগলেও একই হয়। সুতরাং আমি আবেদন করব, যে গুটি কয়েক নেতা টাকার বিনিময়ে পুলিশের গাড়ি জ্বালাচ্ছে, থানা ঘেরাও করছে, তাঁদের আমি সম্মান করি না। আমি দুঃখিত, আমাকে এ সব বলতে হচ্ছে।...
মা-মাটি-মানুষের সরকার আপনাদের অনেক নিরাপত্তা দিয়েছে এবং দিচ্ছে। কিন্তু আপনারা যদি মনে করেন, আমার দিকেই শেল ছুড়বেন, আমার বুকেই শেল বিঁধবে, তা হলে জেনে রাখুন, মমতা ব্যানার্জি কিন্তু কারও পক্ষে নয়, মানুষের পক্ষে।... আমি দু’পক্ষের নেতাদের বলছি, আপনাদের জন্য আমাকে অনেক অসম্মানিত হতে হয়েছে।