প্রতীকী ছবি।
এই সময়ে আকালটা দেখা দেয় প্রতি বছরই। রক্তের আকাল। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব, গ্রীষ্মে সারা রাজ্যে কমবেশি এক লক্ষ বোতল রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় রক্তদান শিবির করেও সেই চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এ বার তাই রক্ত সংগ্রহে মাঠে নামছে রাজ্য সরকার।
নবান্নে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আকাল মেটাতে টানা ১৯ দিন ধরে রক্তদান শিবির করবে পুলিশ, পুরসভা ও পঞ্চায়েত। লক্ষ্য, অন্তত ৫০ হাজার বোতল রক্ত সংগ্রহ করা। এই বিরাট কর্মসূচি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে ইতিমধ্যেই নির্দেশ পাঠিয়েছেন রাজ্য ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিলের সদস্য-সচিব সৌমিত্র মোহন।
কাউন্সিলের এক সদস্য জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন সারা রাজ্যে এক দিনে রক্তদান শিবির হোক। কিন্তু তাতে সংগৃহীত রক্তের একটা অংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ঠিক হয়েছে, শিবির চলবে ১৯ দিন ধরে। প্রথমে ২০-২৬ মে টানা সাত দিন রাজ্যের সব থানা রক্তদান শিবির করবে। তার পরের ১২ দিন (২৭ মে-৭ জুন) প্রতিটি পুরসভা এবং ব্লকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হবে।
রক্তদাতাদের কথা মাথায় রেখে শিবির হবে সন্ধ্যায়। নির্দেশে বলা হয়েছে, সম্ভব হলে কোনও বাতানুকূল হলঘরে শিবির করতে হবে। রাখতে হবে জেনারেটরের ব্যবস্থা। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্যকর্তা, পুলিশকর্তা, পুরসভার মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করে গোটা পরিকল্পনার নকশা তৈরি করতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। যুক্ত করতে হবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকেও।
নিয়ম অনুযায়ী সংগ্রহের ছ’ঘণ্টার মধ্যে রক্ত পাঠিয়ে দিতে হবে কোনও মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিটে। নইলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেটা যাতে না-হয়, তার জন্য প্রতিটি শিবিরের কাছে পরিবহণের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। কোথা থেকে কোন ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করবে, তা বলে দেওয়া হয়েছে। কোন ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত কোন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হবে, তার তালিকাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়। বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও ব্লাড ব্যাঙ্ক যাতে সামর্থ্যের বেশি রক্ত সংগ্রহ না-করে।
সদ্য স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পরিচালনায় গ্রীষ্মকালীন রক্তের চাহিদা মেটাতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেই জন্যই রীতিমতো সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। রক্তের অভাবে যাতে মানুষের হয়রানি না-হয়, সেই ব্যাপারে সরকার সদা সজাগ।’’