আতঙ্ক কাটিয়ে সবে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল দার্জিলিং। বুকিং-বাতিলের হিড়িক থিতিয়ে এসে নতুন করে হোটেল-রিসর্টগুলিতে ঘরের খোঁজ শুরু করেছিলেন পর্যটকেরা।
মঙ্গলবার জমজমাট ম্যালে ঘোড়ায় চড়া, ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পিছনে রেখে ছবি তোলা, কেভেন্টার্সের চাতাল জুড়ে ভিড়—পুরনো চেহারা নিয়েই ফিরে এসেছিল দার্জিলিং। কিন্তু মাঝ-দুপুরে পাহাড় কেঁপে উঠতেই ছবিটা বদলে যেতে শুরু করেছে। এক ঝাঁকুনিতেই গুটিয়ে গিয়েছেন পর্যটকদের অনেকেই। বিকেল থেকেই ফেরার টিকিটের খোঁজ করতে শুরু করেছেন অনেকে। দার্জিলিঙের বাস এবং ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে পর্যটকদের ঘরমুখো লাইন। কম্পনের পরেই কলকাতা এবং সমতলের অন্য শহর থেকেও ট্যুর অপারেটরদের মোবাইলে আসতে শুরু করেছে একের পর এক ফোন। প্রশ্ন একটাই—পাহাড়ে যাওয়া নিরাপদ তো?
পুণে থেকে এ দিন দার্জিলিং পৌঁছন শঙ্কর গোপাল। পাহাড় কাঁপতে দেখে দুপুরেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, নেমে যাবেন। দিল্লির বাসিন্দা প্রতাপ গৌতম বলছেন, ‘‘চৌরাস্তার পাশে চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। পাশেই খাদ। ভূমিকম্পের সময় মনে হল বাড়িটাই খাদে পড়ে যাবে। আর থাকা!’’
এ দিন অবশ্য দার্জিলিঙে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। তবে, ভূমিকম্পের সময় হুড়োহুড়িতে পাহাড় থেকে নামতে গিয়ে চার জন জখম হয়েছেন মিরিকে। ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন এতোয়া-র তরফে জানানো হয়েছে, দুপুরের পর থেকেই মোবাইল বাজতে শুরু করেছে। সবাই উদ্বিগ্ন। তাঁর গলায় স্পষ্ট হতাশা।
তবে পর্যটকদের অন্য চেহারাও দেখা গিয়েছে। দুপুরে মহাকাল মন্দিরে ছিলেন জামশেদপুরের বাসিন্দা স্বপ্নাঘোষ। বলছেন, ‘‘চার দিক করে কাঁপছিল। তবে ভূমিকম্প সর্বত্রই হতেপারে। পালিয়ে যাব কেন, ঘুরতেএসেছি, থাকব।’’ হোটেল ব্যবসায়ীরাও মনে প্রাণে চাইছেন এই মনোভাবটাই।
আর শহর দার্জিলিং আর আশপাশের পাহাড়ি গ্রামের মন্দির থেকে তাই ভেসে আসছে প্রার্থনা—আর যেন না কাঁপে পাহাড়।