প্রতীকী ছবি।
ট্রেন বাতিলের জেরে দু’সপ্তাহের দুর্ভোগে দাঁড়ি পড়ল। রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হল খড়্গপুরে। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে হাসি ফুটল নিত্যযাত্রীদের মুখে।
এক সময় টিকিয়াপাড়ায় ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় বদলের পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে ১৫ দিন সময় লেগেছিল। তবে খড়্গপুরে এশিয়ার সর্ববৃহৎ ‘ইলেকট্রনিক্স রুট ইন্টারলকিং’ (ইআরআই) ব্যবস্থা চালুর পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ে। পূর্ব ঘোষণা মতোই রবিবার রাতে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালুর সঙ্গে সঙ্গে খড়্গপুর স্টেশনের ৭ ও ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিটে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয়। তারপর রাত ৮টায় ওই প্ল্যাটফর্মে আসে সেকেন্দরাবাদ-হাওড়া ইস্টকোস্ট এক্সপ্রেস। রাতে ট্রেন দেরিতে চললেও সোমবার সকাল থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। প্ল্যাটফর্ম না পেয়ে হোম সিগন্যালে দাঁড়াতে হয়নি কোনও ট্রেনকে। ডাউন পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ধরতে সকাল ৯টায় গিরিময়দানে পৌঁছন খরিদার অর্ক চট্টোপাধ্যায়। নির্ধারিত সময়েই ট্রেন আসে। অর্কের অভিজ্ঞতা, “গিরিময়দান থেকে খড়্গপুর পৌঁছতে পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের যে পাঁচ-দশ মিনিট দেরি হয়, সেটুকুও হল না।”
নয়া ব্যবস্থা চালু করতে ১৬ দিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। শুক্রবার থেকে ভোগান্তি চরমে পৌঁছয়। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে বালিচকে গিয়ে ট্রেন ধরতে সমস্যা হয়। তবু সব ঝক্কি মানেন যাত্রীরা। মেদিনীপুর-হাওড়া নিত্যযাত্রী সংগঠনের সম্পাদক হিমাংশু পাল বলেন, “রেলের এই কাজে আমাদের সমর্থন ছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থায় খড়্গপুরে অনেক রুট বাড়ল। আমাদের দাবি, বেলা সাড়ে ১১টার পরে খড়্গপুর-আদ্রা রুটে ট্রেন দিক রেল।” মেদিনীপুর-খড়্গপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জয় দত্ত খড়্গপুর-হাওড়া ‘ননস্টপ ট্রেন’ চালুর দাবি মনে করিয়ে দিয়েছেন।
রবিবার রাতে নতুন ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালুর পরে আদ্রা, চক্রধরপুর, রাঁচি থেকে আসা রেল কর্মীদের হাত থেকে দায়িত্ব নিয়েছেন খড়্গপুর রেল কর্মীরা। গোটা প্রক্রিয়া দেখার জন্য গার্ডেনরিচ, আদ্রা, চক্রধরপুরের সিগন্যালিং বিভাগের কয়েক জন আধিকারিক খড়্গপুরে আছেন। এ দিন খড়্গপুর ডিআরএম অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এসএন অগ্রবাল বলেন, “এই ব্যবস্থায় ট্রেনের গতি যেমন বাড়বে, তেমনই প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে সিগন্যালে ট্রেনকে দাঁড়াতে হবে না। নিরাপত্তাও বাড়বে।” তিনি জানান, সাঁতরাগাছি ও শালিমারে রেলের বিশেষ টার্মিনাস গড়া হচ্ছে। এতে অনেক বেশি ট্রেন ওই দুই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।