জঙ্গলমহল অচল করার হুঁশিয়ারি

বিহিত চাই বঞ্চনার, দাবি আদিবাসীদের

সাঁওতালি এডুকেশন বোর্ড গঠন, সাঁওতালি মাধ্যমে উপযুক্ত শিক্ষার পরিকাঠামো গড়া, সাঁওতালি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন, ২০১৮ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাঁওতালি মাধ্যমের পরীক্ষার্থীদের জন্য সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করা-সহ একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের দাবিতে এ দিন আদিবাসীরা মিছিল করে ডিএম অফিসের চত্বরে ঢুকতে যান।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪১
Share:

প্রতিবাদ: তমলুকে আদিবাসীদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

জঙ্গলমহলের উন্নয়ন তাঁর সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলে প্রায়ই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য কিছুই করেনি বলে সোমবার ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল আদিবাসীদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। এ দিন কয়েক হাজার আদিবাসী তির-ধনুক-টাঙি নিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহর ও পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকেও বিক্ষোভ দেখান আদিবাসীরা।

Advertisement

সাঁওতালি এডুকেশন বোর্ড গঠন, সাঁওতালি মাধ্যমে উপযুক্ত শিক্ষার পরিকাঠামো গড়া, সাঁওতালি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন, ২০১৮ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাঁওতালি মাধ্যমের পরীক্ষার্থীদের জন্য সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করা-সহ একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের দাবিতে এ দিন আদিবাসীরা মিছিল করে ডিএম অফিসের চত্বরে ঢুকতে যান। অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের দফতরে যাওয়ার রাস্তায় এ দিন দুপুরে পুলিশের তিনটি ব্যারিকেড ভেঙে দেন আদিবাসীরা। পুলিশের সঙ্গে মহিলা বিক্ষোভকারীদের রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়। বিক্ষোভের জেরে জেলাশাসকের অফিস লাগোয়া রাস্তাগুলিতে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়।

ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বজিত মাহাতোর নেতৃত্বে পুলিশ আধিকারিকরা আদিবাসীদের বুঝিয়ে নিরস্ত করেন। মাঝি পারগানা মহলের সর্বোচ্চ নেতা ‘দিশম পারগানা’ নিত্যানন্দ হেমব্রম, জেলা নেতা ‘জগ পারগানা’ রবিন টুডু-সহ আদিবাসী সমাজের পাঁচ জন প্রতিনিধি জেলাশাসকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ২৭-দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জমা দিতে যান।

Advertisement

আদিবাসী নেতারা এ দিন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেন, সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা নিয়ে কিছুই করেনি রাজ্য সরকার। আদিবাসীরা চরম ভাবে বঞ্চিত ও অত্যাচারিত। আদিবাসীদের দাবিগুলি নিয়ে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। বিক্ষোভ জমায়েতে আদিবাসী নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, রাজ্য সরকারের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা না হলে ২০ ডিসেম্বরের পরে জঙ্গলমহলে অচল করে দেওয়া হবে।” ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন বলেন, “আদিবাসী সংগঠনের দাবির বিষয়টি শিক্ষা দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হবে।”

অন্য দিকে, মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেট মোড়েও বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসীরা। বিক্ষোভের জেরে দীর্ঘক্ষণ কালেক্টরেট মোড় অবরুদ্ধ ছিল। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। দুপুরের দিকে কালেক্টরেট মোড়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়। এ দিনই দুপুরে তমলুক শহরে জেলাশাসকের অফিসের সামনেও জড়়ো হয়ে আদিবাসীয়া বিক্ষোভ দেখায়। তমলুকে সংগঠনের নেতৃত্ব অলক বেসরা দাবি করেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে সব আদিবাসী পড়ুয়ার জন্য অলচিকি লিপির পাঠ্যবই দিতে হবে। খাস জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন