ফাইল চিত্র।
পুরুলিয়ার বলরামপুরের বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত আট সপ্তাহের মধ্যে শেষ করা হবে বলে কলকাতা হাইকোর্টে জানাল রাজ্য। শুক্রবার রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে মুখবন্ধ একটি রিপোর্ট জমা দেন। রাজ্যের দাবি, তদন্তের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। জোগাড় হয়েছে ইলেকট্রনিক তথ্যপ্রমাণ। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখাও হচ্ছে। তবে ফরেন্সিক পরীক্ষাগার থেকে মৃতের ভিসেরা-রিপোর্ট আসা বাকি।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরে, গত ২৯ মে পুরুলিয়ার বলরামপুরে সুপুরডি গ্রাম থেকে বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। ৩০ মে গাছ থেকে ত্রিলোচনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরনের টি-শার্টে লেখা ছিল— “বিজেপি করা! এবার বোঝ”। ওই ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। বিজেপি সরাসরি তৃণমূলকেই দায়ী করে এই ঘটনায়। তারা সিবিআই তদন্ত দাবি করে। যদিও অভিযোগ গোড়া থেকেই উড়িয়ে দিয়ে আসছে তৃণমূল। তদন্তে নেমে সুপুরডিরই বাসিন্দা পাঞ্জাবি মাহাতোকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ত্রিলোচনের বাবা হাড়িরাম মাহাতো। গত ২৭ জুন সেই মামলার প্রথম শুনানি ছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে। হাড়িরামের আইনজীবী পার্থ সেনগুপ্ত ওই দিন জানিয়েছিলেন, সিআইডি তদন্তের কী অগ্রগতি হয়েছে তা তাঁরা আগে দেখে নিতে চান। তা শুনে বিচারপতি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তদন্ত কী হয়েছে সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে।
এ দিন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন সেটি তৈরি করেছেন সিআইডি-র এক অতিরিক্ত স্পেশাল সুপার। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানান, রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আনা উচিত হবে না। একই সঙ্গে তিনি জানান, আদালতের নির্দেশ মতো হাড়িরামের বাড়ির সামনে ২৪ ঘণ্টার পুলিশ পিকেট বসানো রয়েছে। তাঁকে ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
সরকারি কৌঁসুলির বক্তব্যের বিরোধিতা করেন হাড়িরামের আইনজীবী। তাঁর দাবি, মক্কেলকে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। তবে পার্থবাবু জানান, রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলের কথা মতো আট সপ্তাহ তাঁর মক্কেল অপেক্ষা করে থাকবেন।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ২৭ সেপ্টেম্বর ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।