রেল অবরোধে ভোগান্তি চরমে

কেউ যাচ্ছিলেন কলকাতায় চিকিৎসার জন্য, কারও গন্তব্য ছিল ব্যবসার কাজে খড়গপুর। কেউ বা একেবারেই নিত্যযাত্রী। কিন্তু চার ঘণ্টার রেল অবরোধে ওলট-পালট হয়ে গেল তাঁদের সব পরিকল্পনা। মেচেদা স্টেশনে দুর্ঘটনার জেরে শুক্রবার সকালে কলকাতা-খড়্গপুর শাখায় দুর্ভোগে পড়লেন কয়েক হাজার যাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

তমলুক ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০১:৫২
Share:

কেউ যাচ্ছিলেন কলকাতায় চিকিৎসার জন্য, কারও গন্তব্য ছিল ব্যবসার কাজে খড়গপুর। কেউ বা একেবারেই নিত্যযাত্রী। কিন্তু চার ঘণ্টার রেল অবরোধে ওলট-পালট হয়ে গেল তাঁদের সব পরিকল্পনা। মেচেদা স্টেশনে দুর্ঘটনার জেরে শুক্রবার সকালে কলকাতা-খড়্গপুর শাখায় দুর্ভোগে পড়লেন কয়েক হাজার যাত্রী।

Advertisement

এ দিন সকালে মেচেদা স্টেশনের কাছে রেল লাইন পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় বছর পঁয়তাল্লিশের আলেম খানের। চিকিৎসার সুযোগ মেলেনি, এই অভিযোগ তুলে সকাল ৮টা থেকে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে মৃতদেহ রেখে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে মেচেদা স্টেশনের কাছে সবকটি লাইনের উপর রেললাইনেরই লোহার পাতের টুকরো ফেলে ট্রেন চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। শুরু হয় ট্রেন বিভ্রাট। মেচেদা স্টেশনের কাছেই আটকে পড়ে হাওড়া এবং খড়গপুরগামী দু’টি লোকাল ট্রেন। অবরোধের জেরে কোলাঘাট স্টেশনের কাছে থমকে যায় হাওড়া থেকে দিঘাগামী এক্সপ্রেস, হাওড়া থেকে টিটলাগড়গামী ইস্পাত এক্সপ্রেস।

বাগনান, উলুবেড়িয়া, সাঁকরাইল প্রভৃতি স্টেশন থেকে বাস ধরার জন্য মুম্বই রোডের দিকে চলে আসেন অনেকে। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাসগুলি ছিল ভিড়ে ঠাসা। প্রচন্ড গরমে হাঁসফাস করতে করতে বাসে চড়েই গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা দেন বহু মানুষ।

Advertisement

পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসার পরে বেশ কিছুক্ষণ ধরে আলোচনা চলে। শেষে সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। স্বাভাবিক হয় ট্রেন চলাচল।

বেলা ১১টা নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে গড়িয়ে যায় সন্ধ্যা। এ দিন দুপুর তিনটে নাগাদ আন্দুল স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়েছিলেন প্রকাশ রায়। কিন্তু ট্রেন আসে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে। চারটে নাগাদ ট্রেন পেলেও সেই ট্রেন হাওড়ায় ঢোকে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। তাঁর কথায়, ‘‘এটা তো হওয়ারই কথা। এত ট্রেন পরপর ছাড়ছে। সব একসঙ্গে হাওড়া স্টেশনে ঢুকবে কী করে?’’

লোকাল ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যাওয়ার জন্য বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত হাওড়া স্টেশনে কোনও ট্রেন ঢুকতে বা বেরোতে পারেনি। তার জেরে হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগে ওইদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত ট্রেন অস্বাভাবিক দেরিতে চলে। শুক্রবার সকালে আবার এই গণ্ডগোলের জেরে ফের সমস্যায় পড়েন যাতায়াতকারীরা। টানা দু’দিন রেল বিভ্রাটে বিরক্ত নিত্যযাত্রীরা।

ক্ষোভও উগড়ে দিয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। নিত্যযাত্রী এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘কানে ফোন নিয়ে রেল লাইন পেরনো তো অপরাধ। তারপর তার মৃত্যুর জন্য কেন এত বিক্ষোভ কিসের? আর সেই সমস্যা মেটাতে রেল দফতর ও প্রশাসনের ভূমিকাও খুবই খারাপ।’’

রেলের তরফে অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন