তিলতা সেতুতে ট্রেনের মহড়া দৌড়। ফাইল চিত্র।
ঢিকিয়ে ঢিকিয়ে চলছে কামরূপ এক্সপ্রেস। ৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার থেকে চলবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসও।
কিন্তু কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ এবং অসমগামী বাকি ট্রেনগুলিকে আপাতত ১৫ তারিখ পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। বাতিলের সেই তালিকায় দার্জিলিং মেল, পদাতিক, সরাইঘাট, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য ট্রেন। পুজোর আগে ওই রুটের বিভিন্ন ট্রেনের চলাচল কতটা স্বাভাবিক করা যাবে, রেলও বলতে পারছে না।
বন্যার জেরে সেতু ও লাইন ভেঙে যাওয়ায় ১৭ অগস্ট থেকে অসম ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতা-সহ দেশের অন্যান্য শহরের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। বিশেষ করে কাটিহারের ডিভিশনে সুধানি-তিলতা সেতু ভেঙে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আপ ও ডাউন লাইনের দু’টি সেতুই ভেসে যায় জলের তোড়ে। প্রায় এক হাজার রেলকর্মী এবং সেনার পর্যবেক্ষণে ওই সেতু দু’টি মেরামতির কাজ শুরু করেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তৃপক্ষ। ২৯ অগস্ট থেকে একটি সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে ফের মালগাড়ি চলাচল শুরু হয়। ৩ সেপ্টেম্বর চালু হয় যাত্রিবাহী ট্রেন।
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করতে প্রথমে চালানো হয় কামরূপ এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনটিই এখন চলছে। কাল, শুক্রবার থেকে চলবে কাঞ্চনজঙ্ঘা (তিনটি) এক্সপ্রেস। কিন্তু অন্যান্য ট্রেন এখনও ছাড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। রেল সূত্রের খবর, একটি লাইন দিয়েই এখন মালগাড়ি ও যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল করছে। দ্বিতীয় লাইন চালু হয়নি। নতুন করে আর ট্রেন নেওয়ার ক্ষমতা নেই ওই চালু লাইনটির। সেই জন্য এখনই বাকি ট্রেনগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাতিল
• শতাব্দী এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি-হাওড়া
• দার্জিলিং মেল নিউ জলপাইগুড়ি-শিয়ালদহ
• সরাইঘাট এক্সপ্রেস গুয়াহাটি-হাওড়া
• বাতানুকূল এক্সপ্রেস হলদিবাড়ি-কলকাতা
• পদাতিক এক্সপ্রেস নিউ আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ
• গরিব রথ গুয়াহাটি-কলকাতা
• তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস নিউ আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ
• উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস নিউ কোচবিহার-শিয়ালদহ
• কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩৩ নম্বর সুধানি-তিলতা সেতুর দ্বিতীয় লাইনে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। তবে এ বারের বন্যায় সেতুর এত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে যে, তা সারাতে অনেক সময় লাগবে। সব চেয়ে বড় সমস্যা হল, বর্ষণ এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। মাঝেমধ্যেই হয়ে চলেছে বৃষ্টি। তাই জল সম্পূর্ণ নামছে না। ফলে কাজেরও গতি থমকে যাচ্ছে।
প্রবল বর্ষণ এবং ভয়াবহ বন্যায় রেললাইনের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়েছে যে, মেরামতি সম্পূর্ণ করে পুজোর আগে ট্রেন চলাচল কতটা স্বাভাবিক করা যাবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই। রেল-কর্তৃপক্ষের কাছেও এর উত্তর নেই। ফলে এ বার পুজোয় অনেকের ডুয়ার্স, পাহাড় বা অসমের দিকে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় বার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।