ঘটনাস্থলে মন্ত্রী অরূপ রায়। —নিজস্ব চিত্র।
উড়ালপুলে মোটরবাইক আর জুতো জোড়া পড়ে থাকতে দেখেই সন্দেহটা হয়েছিল মন্ত্রীর। জাতীয় সড়কে গাড়ি থামিয়ে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন, ট্রাকের ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে দুই মোটরবাইক আরোহী। তাঁরা তখনও পড়ে রাস্তার ধারে। আধ ঘণ্টার উপরে পড়ে থাকলেও তাঁদের উদ্ধার তো দূর, পুলিশ বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ফোনও করেননি পথচলতি কেউ।
তখনই কর্তব্য স্থির করেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। রবিবার দুপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে তিনি হাওড়া থেকে পুরুলিয়া যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার কথা জেনেই ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকেই তিনি পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালকে ফোন করে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। পুলিশের কন্ট্রোল রুমেও খবর দেওয়া হয়। মন্ত্রীর কথায়, “অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ি আসতে ন্যূনতম সময়ের প্রয়োজন। তা বাদ দিতে চাইনি বলে আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত তুলে গাড়ি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, একটা গাড়িকেও দাঁড় করাতে পারিনি। এ রকম অমানবিক হওয়া উচিত নয়।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, আহতেরা জামালপুর থানা মোড়ের বাসিন্দা অরূপ পাল ও স্বরূপ পাল। দুই ভাই বাইকে বর্ধমান যাচ্ছিলেন। বেলা ১১টা নাগাদ পালশিট উড়ালপুরের কাছে একটি ট্রাক পিছন থেকে মোটরবাইকে ধাক্কা মারলে দু’জনেই ছিটকে পড়েন। বাইক ও চটি-জুতো রাস্তায় পড়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, মন্ত্রীর কাছে খবর পেয়ে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। স্বরূপের মাথায় ও অরূপের পায়ে চোট লেগেছে। অরূপবাবু বলেন, “এসপি-কে ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স আনা হয়। তাতে এক পুলিশ কর্মী দেখভালের জন্য তুলে দেওয়া হয়। অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরে ঘটনাস্থল ছাড়ি।”
আরও পড়ুন: ডাক্তারদের চাপ কমাতে দাওয়াই সেই ধ্যান
পুরুলিয়া পৌঁছেও মন্ত্রী আহতদের খোঁজ নিয়েছেন। বিপদের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো রাজনৈতিক কর্মীদের কর্তব্য জানিয়ে তাঁর আক্ষেপ, “দুর্ঘটনা দেখেও পথচলতি মানুষ দাঁড়াবে না কিংবা রাস্তার ধারে দেওয়া পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দেবে না!” আহতদের বাবা নেপাল পাল মন্ত্রীর ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।