rainfall

‘ছদ্ম’ বর্ষার বৃষ্টি, বজ্রপাতে মৃত্যু দুই যুবকের

রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ দিন কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির উপরে বিরাট আকারের বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনেদুপুরে অন্ধকার ঘনিয়ে এনে তুমুল বৃষ্টি। তবে এ যেন ঠিক বর্ষা নয়। বরং একে কার্যত ‘ছদ্ম’ বর্ষার বৃষ্টি বলছেন আবহবিদেরা। সেই ছদ্ম বর্ষার বৃষ্টিতেই বুধবার কার্যত ভেসে গেল কলকাতা ও সংলগ্ন বিভিন্ন জেলা। প্রবল বজ্রপাতও হয়েছে এ দিন। বাজ পড়ে হাওড়ায় মারা গিয়েছেন এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম উমেশ যাদব (২৮)। তিনি পেশায় টোটোচালক ছিলেন। একটি গ্যারাজের মধ্যেই বজ্রাহত হন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে বজ্রাঘাতে মারা গিয়েছেন অজয় সরেন (৩১) ।

Advertisement

রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ দিন কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির উপরে বিরাট আকারের বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। মেঘের সর্বাধিক উচ্চতা ছিল প্রায় ১২ কিলোমিটার। মেঘের ঘনত্ব এত বেশি ছিল যে, আকাশ পুরো কালো হয়ে যায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কলকাতায় ৯৭.১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দমদম এবং সল্টলেকে বৃষ্টির পরিমাণ যথাক্রমে ৯১ এবং ৭২ মিলিমিটার।

প্রবল বৃষ্টির দরুন কলকাতায় নামতে আসা চারটি বিমান মুখ ঘুরিয়ে ভুবনেশ্বরে উড়ে যেতে বা‌ধ্য হয়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বেঙ্গালুরু, পটনা, চেন্নাই, ডিব্রুগড় থেকে শহরে নামতে আসা ওই চারটি বিমানই ছিল ইন্ডিগোর। বেলা আড়াইটে থেকে ৩টে ২০ পর্যন্ত ৫০ মিনিট ধরে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান নামতে পারেনি। তবে শহর থেকে উড়ান ছাড়তে কোনও সমস্যা হয়নি। বিমানবন্দরের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ জমে ছিল বলে বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে।

Advertisement

আকাশ মেঘলা ছিল এ দিন সকাল থেকেই। দুপুরের পরে আকাশ একেবারে কালো হয়ে যায়। যেন রাতের আঁধার নেমে আসে। শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে প্রচণ্ড বজ্রপাত। তাপমাত্রাও অনেকটা নেমে যায়। আবহবিদেরা জানান, বর্ষার বৃষ্টি অনেকটা এলাকা জুড়ে এবং ছন্দোবদ্ধ ভাবে হয়। এমন স্বল্প ক্ষণের জোরালো বৃষ্টি হয় না।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা দুর্বল হয়ে রয়েছে। তবে একেবারে কলকাতার উপরেই অবস্থান করছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা। তার ফলেই বিপুলায়তন বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। ভারী ও প্রগাঢ় সেই বজ্রগর্ভ মেঘ দ্রুত স্থান বদল করতে পারেনি। তার ফলেই অল্প এলাকায় প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়।

এ দিন প্রবল বৃষ্টিতে বহু এলাকায় জল জমে যায়। শহরাঞ্চলের রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয়। তবে কয়েক দিন ধরে যে-প্রবল ভ্যাপসা ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া সহ্য করতে হচ্ছিল, প্রবল বৃষ্টি তার থেকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।

পূর্ব বর্ধমান জেলায় এ দিন দুপুর থেকে আকাশ মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। বিকেলে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি নামেনি। বজ্রপাতও বিশেষ হয়নি। বিকেলে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি নামে। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ-সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement