বাবা মারে, বিডিওকে নালিশ দুই বালকের

বাবা মারে। খেতে দেয় না। ছুড়ে দেয় স্কুলের ব্যাগও। বাবার বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ নিয়ে ঠাকুমার হাত ধরে সটান বিডিও-র কাছে হাজির নাবালক দুই ভাই। বিডিও সাহেবের কাছে তাদের একটাই আর্জি— বাবার অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না। তাই তিনি যেন একটা বিহিত করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৫:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাবা মারে। খেতে দেয় না। ছুড়ে দেয় স্কুলের ব্যাগও। বাবার বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ নিয়ে ঠাকুমার হাত ধরে সটান বিডিও-র কাছে হাজির নাবালক দুই ভাই। বিডিও সাহেবের কাছে তাদের একটাই আর্জি— বাবার অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না। তাই তিনি যেন একটা বিহিত করেন।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈদ্যনাথপুরের দুই নাবালকের এমন অভিযোগ শুনে প্রথমে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন চন্দ্রকোনা-২ এর বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী। পরে অবশ্য তিনি দুই ভাইয়ের কথা মন দিয়ে শোনেন। কথা বলেন তাদের ঠাকুমার সঙ্গে। পরে দুই ভাইকে সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন বিডিও। তাঁর কথায়, ‘‘দুই নাবালক সরকারি হোমে থেকে পড়াশোনা করবে। যথাসময়েই তাদের স্কুলে ভর্তি করানো হবে। বাবার ব্যবহারে মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত তারা। তাই কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে ওই দুই নাবালকের মা আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন। অভিযোগ, মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ, বাবা মদ খেয়ে ছেলেদের ঘর থেকে বার করে দিতেন। লাঠি দিয়ে মারধরও করতেন বলে অভিযোগ। নাতিদের পাশে দাঁড়ান ঠাকুমা, ঠাকুরদা। অমিতের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নালিশও জানিয়েছিলেন পড়শিরা। পুলিশ এসে সতর্ক করলেও লাভ হয়নি। বরং আরও বেড়েছিল অত্যাচার। দুই ভাইয়ের ঠাকুরদার কথায়, ‘‘ছেলে বেকার। সারাদিন মদ খেয়ে ঘুরে বেড়ায়। ওর এমন আচরণে আমি দুই নাতির নামে সব সম্পত্তি লিখে দিয়েছি। তাই এখন নাতিরা ওর চোখে বিষ হয়ে গিয়েছে।”

Advertisement

অভিযুক্তের অবশ্য যুক্তি, “আমি ছেলেদের পড়াব না মারধর করব তার কৈফিয়ত সাংবাদিকদের দেব না। প্রশাসনেরই বা নাক গলানোর কী আছে?”

দুই ভাইয়ের এক জন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। অন্য জন পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। বাবার কাছে আর থাকতে চায় না কেউই। বুধবার বড় ভাই বলে, ‘‘ভাইকে সকাল থেকে খেতে দিত না বাবা। ঠাকুমা-ঠাকুরদা লুকিয়ে খাওয়াত। আমার বইয়ের ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দেয় বাবা। আমি আর ওই বাড়িতে থাকব না।” আর ছোট জনের কথায়, ‘‘বাবার অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। বাবা আমাদের মেরে ফেলবে। আমি পড়তে চাই। দাদাও যেন পড়তে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন